সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বেশ কয়েকজন আদিবাসী জনগণের বসে থাকা অবস্থার একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পরে এই ছবি প্রচারের ফলে পোস্টগুলোতে ছবিটি- পাহাড়ের সাম্প্রতিক ঘটনার ফলে বাংলাদেশী পাহাড়ের আদিবাসীরা পালিয়ে ভারত ত্রিপুরার গহীন অরন্যে আশ্রয় নিয়েছে হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 'দিঘীনালা' হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে কিছু পোস্টে সরাসরি এই তথ্যই উল্লেখ করা হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর ‘Naresh Chakma’ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে আলোচ্য দাবিতে ছবিটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "#দিঘীনালা। অনেকের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে, কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। না জানি আজ রাতে আরো কতজনের ঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়, কত জনকে হত্যা করা হয়🥹। সেজন্য এরা পালিয়ে বেরাচ্ছে। এখন ইন্টারনেট বন্ধ করে দিছে। কারো সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন–
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি অন্তত পাঁচ মাস আগে থেকেই অনলাইনে রয়েছে। ছবিটির বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া' তে বলা হয়েছে, এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ভারতে যাওয়া শরণার্থীদের।
আলোচ্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ভারতীয় গণমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া'-তে গত ২০ মে "65 more from Chittagong Hill Tracts in Bangladesh enter Mizoram" শিরোনামে প্রকাশিত আলোচ্য ছবিটি সহ একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আরও অন্তত ৬৫ জন শরণার্থী রবিবার দক্ষিণ মিজোরামের লাটলাইতে পৌঁছেছে, তাদের মোট সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১,৪৩৩-এ পৌঁছেছে। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম 'পার্বত্য নিউজ'-এ গত ২১ মে "পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে ৬৫ উপজাতি সদস্যের মিজোরামে প্রবেশ" শিরোনামে আলোচ্য ছবিটি সহ 'টাইমস অব ইন্ডিয়া' এর বরাতে প্রকাশিত আরো একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ফলে হওয়া কোনো ঘটনার নয়।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে পুরোনো ছবি ব্যবহার করে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কারণে আদিবাসীরা পালিয়ে ভারত ত্রিপুরার গহীন অরন্যে আশ্রয় নিয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।