রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল চেয়ে সম্প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো "এডভোকেট অশোক কুমারের মেয়ের ইসলাম গ্রহণ" শিরোনামে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, নিকাব ও বোরকা পরা এক তরুণী নিজেকে 'এড. অশোক কুমারের মেয়ে সুস্মিতা কুমার ঘোষ' দাবি করে তার ইসলাম গ্রহণের কথা জানাচ্ছেন।
শনিবার বিকালে প্রথম পোস্ট হওয়া ভিডিওটি অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন ফেসবুক একাউন্ট ও পেইজ থেকে এটি পুনঃপ্রকাশিত হতে থাকে। নিচে কিছু পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওতে তরুণীর কণ্ঠে শোনা যায় তিনি বলছেন, "আমরা ছোট থেকেই হিন্দু রীতি মেনে বড় হয়েছি। আমার বাবা কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার জন্যে হাইকোর্টে আবেদন করেছে। যার ফলে বাংলাদেশের সমস্ত মুসলমানগন ফেসবুকে প্রতিবাদ করতে থাকে। আমি মুসলমানদের এই একতা দেখে অবাক হয়ে যাই। কেন তারা তাদের ইসলামকে এত ভালবাসে। সারা পৃথিবীতে তারা এত মার খাচ্ছে তবু তারা কেন ইসলাম ছাড়তে চায়না। তারপর আমি ইসলাম নিয়ে ইন্টারনেটে সার্চ দেই।"
দাবি মতে, ইউটিউবে মিজানুর রহমান, হাফিজুর রহমান এবং আজিজুল সাহেবের ওয়াজ শুনে তিনি বুঝতে পারেন, 'ইসলামই একমাত্র ধর্ম।'
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ-এর অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, ভিডিওটি এডিট করা। অর্থাৎ, "এডঃ অশোক কুমারের মেয়ের ইসলাম গ্রহণ" বলে যে দাবি করা হচ্ছে সেটি ভুয়া।
প্রকৃতপক্ষে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম ফেসবুকে আপলোড হওয়া ভিন্ন একটি ঘটনার ভিডিওর অংশ বিশেষ কেটে তাতে ভিন্ন নারী কণ্ঠ যুক্ত করে সেটিকে "অশোক কুমারের মেয়ে"র ভিডিও হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আসল ভিডিওটি দেখুন এই লিংকে। ফেব্রুয়ারীতে ফেসবুকে আপলোড হওয়া ভিডিও সংক্রান্ত একটি সংবাদ প্রতিবেদন বিবিসিতে "মাকে গণধর্ষণের দুবছর পর মেয়েকেও গণধর্ষণের অভিযোগ একই আসামীদের বিরুদ্ধে" শিরোনামে পাওয়া যায়।
মূলধারার সংবাদমাধ্যমে ভিক্টিমের পরিচয় প্রকাশ করা না হলেও উক্ত খবরের তথ্যাদির সাথে ফেসবুক ভিডিওর জাকিয়া আক্তার মুন্নি নামীয় তরুণীর প্রদত্ত তথ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। দেখুন এখানে।
এছাড়াও এই ঘটনার প্রতিবাদে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদও অনুষ্ঠিত হয়। দেখুন এখানে ও এখানে।