"আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামের একটি খবর বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশিত হয়েছে- এমন স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে জনপ্রিয় অনেক ব্যক্তিকেও তাদের ওয়ালে স্ক্রিনশটটি পোস্ট করতে দেখা গেছে।
পোস্ট দুটি আর্কাইভ দেখুন এখানে ও এখানে।
নিঝুম মজুমদার নামে একজন আইনজীবী স্ক্রিনশটটি পোস্ট করে দীর্ঘ স্ট্যাটাস লিখেছেন। নিচে দেখুন সেই স্ট্যাটাসের আংশিকের স্ক্রিনশট--
এছাড়া আরও অনেক ফেসবুক আইডি, পেইজ ও গ্রুপ থেকে আলোচ্য স্ক্রিনশটটি পোস্ট করা হয়েছে।
কেউ কেউ আবার বাংলা নিউজের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটটি পোস্ট না করলেও "মামুনুল হক নিজে বলেছেন তিনি ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন" এই বার্তা সম্বলিত স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তেমন কিছু পোস্ট দেখুন--
দৈনিক শতবর্ষ নামক একটি অনলাইন পোর্টালেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, বাংলানিউজ এর নামে ছড়ানো স্ক্রিনশটটি এডিট করা। "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামের কোনো প্রতিবেদন বাংলানিউজে প্রকাশিত হয়নি।
খেয়াল করলে দেখা যাবে, ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটে শিরোনামের নিচে প্রতিবেদনটি প্রকাশের সময় ও তারিখ দেয়া আছে। সেখানে লেখা রয়েছে, "আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০"। অর্থাৎ, ৭ ডিসেম্বর ২৩টা ৫০ মিনিটে (রাত ১১টা ৫০ মিনিট) প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
বাংলানিউজের ওয়েবসাইটের আর্কাইভে ৭ ডিসেম্বর তারিখ ক্লিক করলে যে পেইজটি ওপেন হয় তাতে সর্বপ্রথম দেখা যায় "বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা দুঃখজনক: মামুনুল হক" শিরোনামের একটি প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনটিও প্রকাশিত হয়েছে "২৩৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২০" তারিখে। এবং সেই প্রতিবেদনে একই ছবি রয়েছে যেই ছবি ভাইরাল হওয়া "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামের প্রতিবেদনে দেখা গেছে।
বাংলানিউজের ওয়েবসাইটে "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামের কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমেও মামুনুল হকের এমন বক্তব্য সম্বলিত কোনো খবর প্রকাশিত হয়নি।
অর্থাৎ, বাংলানিউজের "বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা দুঃখজনক: মামুনুল হক" শিরোনামের প্রতিবেদনের শিরোনাম এডিট করে বদলে দিয়ে "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" শিরোনামওয়ালা স্ক্রিনশটটি তৈরি করা হয়েছে।
বাংলানিউজের মূল প্রতিবেদনের আর্কাইভ লিংক দেখুন এখানে।
নিচের ছবিতে তুলনা করে দেখানো দুটি প্রতিবেদনকে--
বাংলানিউজের পুরো প্রতিবেদনে মামুনুল হকের বরাতে কী লেখা হয়েছে দেখুন নিচের স্ক্রিনশটে--
মামুনুল হকের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজের যে ভিডিওর বরাতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলানিউজ ৩৭ মিনিটের সেই ভিডিওটি শুনেছে বুম বাংলাদেশ। সেখানে "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম" ধরনের কোনো কথা তিনি বলেননি।
মাওলানা মামুনুল হকের ফেসবুক লাইভের সূত্র ধরে অন্যান্য সংবাদ মাধ্যমেও প্রতিবেদন হয়েছে। দেখুন এখানে।
এদিকে দৈনিক শতবর্ষ নামের যে অনলাইন পোর্টালে "আমিও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ছিলাম: মামুনুল হক" যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে সেটি মূলত বাংলানিউজের প্রতিবেদনের কপিপেস্ট ভার্সন। শুধু শুরুর এবং শেষের প্যারা দুটিতে মনগড়াভাবে মামুনুল হকের বরাতে কিছু বক্তব্য যুক্ত করা হয়েছে।