সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, সাইমা নামের শিশুটি হার্টের রোগে আক্রান্ত এবং একটি বিরল ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য প্রায় চার লাখ টাকা প্রয়োজন। ওই পোস্টে শিশুটির জন্য আর্থিক সাহায্যের আবেদনও করা হয়। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর "amdadul_10" নামের একটি পাবলিক গ্রুপে "Jacika Nur" নামের একটি আইডি থেকে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি শেয়ার করে বলা হয়, "..........#এই ছোট বাচ্চাটির নাম সাইমা। পিতা - মিদুল হক, মাতা- ফিরোজা বেগম, গ্রাম - নজিরহাট, থানা - পশুরাম, জেলা - রংপুর। শিশুটি হার্টের রোগে আক্রান্ত, এবং কিছুদিন আগে ধরা পরে যে সে একটি বিরল ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ডিসঅর্ডার এ আক্রান্ত। যা এক প্রকারের জিনেটিক রোগ। তার চিকিৎসায় প্রয়োজন ৪ লক্ষ টাকা।" উক্ত পোস্টে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের ফোন নম্বর যুক্ত করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টে সংযুক্ত ছবিগুলো দেখুন আলাদাভাবে--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি বাংলাদেশের সাইমা নামের কোন শিশুর নয় বরং ভারতের উত্তর প্রদেশের মানহা নামের একটি শিশুর, যে SMA (স্পাইনাল মাস্কিউলার এট্রোফি) নামের একটি বিরল রোগে ভুগছে।
ছবিটি দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের অসহায় ও দুঃস্থদের জন্য অর্থ উত্তোলনকারী সংস্থা 'Impact Guru' এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আলোচ্য ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়, যা গত ৩ সেপ্টেম্বর পোস্ট করা হয়। ওই ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, ১ বছর বয়সী মানহা নামের এই শিশুটি স্পাইনাল মাস্কিউলার এট্রোফি নামের একটি বিরল রোগে ভুগছে। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
Impact Guru-র অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও আলোচ্য শিশুটির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
ফেসবুকের সূত্র থেকে 'Impact Guru'-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে "I'm Manha & You Can End My SMA Story" শিরোনামে শিশুটির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রায় ১৬ কোটি টাকার প্রয়োজন। শিশুটি বর্তমানে দিল্লির রাজেন্দ্রনগরের Sir Ganga Ram Hospital-এ ভর্তি আছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ভারতের অসুস্থ শিশু মানহার ছবিকে বিভ্রান্তিকরভাবে বাংলাদেশের সাইমার বলে দাবি করা হচ্ছে।
সুতরাং ভারতের অসুস্থ শিশুর ছবি দিয়ে তাকে বাংলাদেশের শিশু দাবি করে বিভ্রান্তিকরভাবে অর্থ সাহায্য চাওয়া হচ্ছে ফেসবুকে, যা প্রতারণাপূর্ণ।