সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে দুটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, নিজের দাঁত তুলে প্রেমিকাকে দাঁত বাঁধাই নেকলেস উপহার দিয়েছেন ছবির ব্যক্তি। ভাইরাল পোস্টের ছবি দুটির একটিতে দাঁত ফোকলা এক ব্যক্তি আর অন্যটিতে একটি দাঁত বাঁধাই নেকলেস দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১০ নভেম্বর 'নিবু-দা' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে করা ছবি দুটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "এই লোক নিজের সব দাঁত তুলে ফেলে, নিজের গার্লফ্রেন্ড এর জন্য দাঁত দিয়ে নেকলেস বানিয়েছে।ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ না শুধু ফোকলা ও বানিয়ে দেয়! ভালোবাসা সুন্দর! ❤️ "। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা দাবিটি অসত্য। মূলত মিশরীয় অভিনেতা মোস্তাফা সোলায়মান আল সায়েদ ( Mostafa Soliman EL Sayed) কৌতুকবশত ছবি দুটি পোস্ট করেছিলেন।
রিভার্স সার্চ করার পর, ছবি দুটি মিশরীয় গণমাধ্যম কায়ারো২৪ ডট কম-এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা গত ৩ নভেম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মোস্তাফা সোলায়মান আল সায়েদ নামের এক অভিনেতা কৌতুকবশত ছবি দুটি পোস্ট করেন। মানুষ এটা সত্য বলে বিশ্বাস করছে শুনে তিনি অবাক হয়েছেন বলেও জানান উক্ত প্রতিবেদককে।
৩১ অক্টোবর আপলোড করা সায়েদের ফেসবুক প্রোফাইল ছবি দুটিও খুঁজে পাওয়া গেছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, "সত্যি বলতে, সবচেয়ে সুন্দর ভালোবাসা আমি দেখেছি, ভালবাসার মানুষকে দাঁত খুলে নিয়ে উপহার দেওয়া।"
মোস্তাফা সোলায়মান আল সায়েদের পোস্টটি একাধিক দেশের সামাজিক মাধ্যমে সত্য ঘটনা দাবি করে ভাইরাল হলে সায়েদ নিজেই সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-এর কাছে বাস্তবে এরকম কোনও ঘটনা ঘটেনি বলে জানান। সায়েদ জানান, স্রেফ কৌতুকের উদ্দেশ্যে এই পোস্টটি করেছিলেন এবং পোস্টের একটি ছবি তার, অন্যটি ইন্টারনেট থেকে তিনি সংগ্রহ করেছেন। রয়টার্সের ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
দাঁতের নেকলেসের ছবিটি আলাদা ভাবে সার্চ করলে, ২০১৬ সালে প্রকাশিত মিডিয়া ইনিশিয়েট বাজফিড-এর স্প্যানিশের সংস্করণের একটি প্রতিবেদন ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, Etsy (ইটসে, হস্ত ও কারুশিল্প ভিত্তিক বিশেষায়িত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম) তে এটি বিক্রি হচ্ছে। Etsy তে মানুষের দাঁতের রকমের বহু নেকলেস রয়েছে।
বুম লাইভ বাংলা ভাইরাল পোস্টটি আগেই যাচাই করেছে।
সুতরাং কৌতুকবশত পোস্ট করা ছবিকে সত্য ঘটনা দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।