সময়টিভির ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার। শিরোনাম, "ধর্ষণের নতুন আইনে প্রথম মৃত্যুদণ্ডাদেশ"।
আর্কাইভ দেখুন এখানে।
প্রতিবেদনের ভেতরে বলা হয়েছে, "টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে মাদ্রাসাছাত্রী গণধর্ষণের মামলায় পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সকালে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় দেন। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডাদেশ সংক্রান্ত অধ্যাদেশে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর ধর্ষণ মামলায় দেশে এটাই কোনো মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিলেন আদালত।"
স্ক্রিনশটে দেখুন--
একই রকম শিরোনামে আরও বেশ কিছু অনলাইন পোর্টালে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। দেখুন নিচের স্ক্রিনশটে--
দৈনিক যুগান্তরের অনলাইনেও "ধর্ষণের নতুন আইনের প্রথম রায়ে ৫ ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড" শিরোনামে খবর প্রকাশ করে পরে শিরোনাম বদলে দেয়া হয়েছে।
নিচের স্ক্রিনশটে দেখুন--
যুগান্তরের শিরোনাম বদলানো হলেও ইউআরএল-এ আগের শিরোনাম রয়ে গেছে। দেখুন নিচে--
ফ্যাক্ট চেক:
খোজ নিয়ে দেখা গেছে, সময়টিভির প্রতিবেদনে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে। আলোচ্য ঘটনাটি "ধর্ষণের নতুন আইনে প্রথম মৃত্যুদণ্ডাদেশ" নয়। টাঙ্গাইলের এই ঘটনায় নতুন সংশোধিত আইনে রায় দেননি আদালত।
বরং এই মামলার রায় হয়েছে পুরনো আইনে।
টাঙ্গাইলের ঘটনাটি ছিলো গণধর্ষণ, যা বিদ্যমান 'নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০' এর ৯ (৩) ধারায় বর্ণিত অপরাধ। এই ধারায় আগে থেকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আছে।
সম্প্রতি একই আইনের ৯ (১) ধারা সংশোধন করে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন থেকে মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। এই ধারার বর্ণিত অপরাধটি 'ধর্ষণ', 'গণধর্ষণ' নয়। অর্থাৎ, এক ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণের ক্ষেত্রে আগে আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ছিলো, বর্তমানে সংশোধন করে মৃত্যুদণ্ড করা হয়েছে। কিন্তু একাধিক ব্যক্তির দ্বারা ধর্ষণ (যাকে গণধর্ষণ বলা হয়ে থাকে), সেটির জন্য আগে থেকেই মৃত্যুদণ্ড সর্বোচ্চ শাস্তি ছিলো। টাঙ্গাইলে বৃহস্পতিবারে ঘোষিত রায়টি ছিলো গণধর্ষণের।
অর্থাৎ, নতুন সংশোধিত আইনে এখনও কারো মৃত্যুদণ্ড বাংলাদেশে হয়নি।
টাঙ্গাইলে গণধর্ষণ মামলার রায়ের পিপি একেএম নাসিমুল আক্তার বুম বাংলাদেশ-কে বলেন, এই রায় নতুন সংশোধিত আইনে হয়নি। যদি কোথাও এমনটি দাবি করা হয়ে থাকে তাহলে তা ভুল। এটি বিদ্যমান আইনের ধারায় বর্ণিত সাজা।
আর গণধর্ষণের কারণে এর আগেও আসামিদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। যেমন তিন বছর আগে লক্ষ্মীপুর আদালতের এ সংক্রান্ত রায় নিয়ে বাংলা নিউজের প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিলো, "লক্ষ্মীপুরে গৃহবধূকে গণধর্ষণের দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড"।