সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, শিশুটির বাড়ি লালমনিরহাটে। লিভার ও ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত শিশুটি টাকার অভাবে শিশুটির চিকিৎসা পাচ্ছে না। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৫ আগস্ট "Nusrat Jahan Ontora Fan's Group" নামের একটি পাবলিক গ্রুপে "হাফেজা মোছাঃ জান্নাতুল" নামের একটি আইডি থেকে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি দিয়ে বলা হয়, "বয়স মাত্র ২ বছর। লিভার ও ফুসফুস রোগে ভুগছে শিশুটি টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পাচ্ছে না শিশুটির পরিবার শিশুটি বাঁচতে চায়। শিশুটি বর্তমানে লালমনিরহাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকায় উন্নত চিকিৎসা না দিলে হাওয়াকে হয়তো আর বাচানো যাবে না শিশুটির বাবা একজন দিন মজুর তার বাবার পক্ষে তার মেয়েকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া অসম্ভব প্রায় আপনারা সবাই মিলে শিশু টিকে সাহায্য করুন ১০_২০ আপনাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার একটু সহোযোগিতায় শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।" আবার ওই পোস্টটিতে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের ফোন নম্বর যুক্ত করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টে সংযুক্ত ছবিগুলো দেখুন আলাদাভাবে---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টদের দাবিটি সঠিক নয়। ছবির শিশুটি বাংলাদেশের হাওয়া খাতুন নয় বরং ভারতের কেরালা প্রদেশের আমিনা, যে স্পাইনাল মাসকিউলার এট্রোফি নামের একটি দুর্লভ জেনেটিক রোগে ভুগছে।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের অসহায় ও দুঃস্থদের জন্য অর্থ উত্তোলনকারী সংস্থা 'Ketto' এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আলোচ্য ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়, যা গত ১৭ আগস্ট পোস্ট করা হয়। ওই ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, ১ বছর বয়সী আমিনা নামের এই শিশুটি স্পাইনাল মাসকিউলার এট্রোফি নামের একটি জেনেটিক রোগে ভুগছে। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
কিটোর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এবং টুইটার একাউন্টেও আলোচ্য শিশুটির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব এবং টুইটারের পোস্টগুলো দেখুন---
ফেসবুকের সূত্র থেকে 'Ketto'-র অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে "Suffering From SMA- My Daughter's Lungs Have Collapsed. Help!" শিরোনামে শিশুটির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ওয়েবসাইটে শিশুটির সংযুক্ত ছবি দেখে বোঝা যায় যে আলোচ্য ছবির শিশু এবং ওয়েবসাইটের শিশুটি একই জন। শিশুটি বর্তমানে কেরালার কালিকটের Aster MIMS Hospital-এ ভর্তি আছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ভারতের অসুস্থ শিশু আমিনার ছবিকে বিভ্রান্তিকরভাবে বাংলাদেশের হাওয়া খাতুনের বলে দাবি করা হচ্ছে।
সুতরাং ভারতের অসুস্থ শিশুর ছবি দিয়ে, তাকে বাংলাদেশের শিশু দাবি করে অর্থ সাহায্য চাওয়া হচ্ছে ফেসবুকে, যা প্রতারণাপূর্ণ।