গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হাইতির রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্স থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর জ্যাকমেলে যাওয়ার সময় একটি ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৬ জন নিহত হওয়ার খবর দেশের মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। খবরের সাথে একটি বিধ্বস্ত বিমানের ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে, যেখানে প্রায় দ্বিখণ্ডিত অবস্থায় একটি বিমানটিকে পরে থাকতে দেখা যায়।
গতকাল ৪ জুলাই মূলধারার সম্প্রচার মাধ্যম একাত্তর টিভি একাত্তর টিভি তাদের অনলাইনে 'হাইতিতে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৬' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের সাথে বিধ্বস্ত বিমানের এমন একটি ছবিকে জুড়ে দেয়া হয়েছে। অনলাইন গণমাধ্যম জাগো নিউজ এবং ঢাকা পোস্টও হুবহু একই শিরোনাম ও ছবি ব্যবহার করে হাইতিতে বিমান বিধ্বস্তের খবরটি প্রকাশ করেছে। এসব গণমাধ্যমের খবরে ব্যবহার করা ছবির নিচে কোন ক্যাপশন দেয়া হয়নি; ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছবিটিকে খবরের সাথে সংশ্লিষ্ট অর্থাৎ হাইতিতে বিমান বিধ্বস্তের ছবি হিসেবে মনে হতে পারে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে তাদের অফিসিয়াল পেজেও খবরটিকে আলোচ্য ছবিটিসহ পোস্ট করা হয়েছে। দেখুন স্ক্রিনশট--
জাগো নিউজ ও ঢাকা পোস্টের ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট-
এছাড়াও হাইতিতে বিমান বিধ্বস্তের খবরের সাথে আলোচ্য ছবিটি ব্যবহার করে খবর প্রকাশ করা মূলধারার উল্লেখযোগ্য গণমাধ্যমগুলো হলো- দৈনিক ইনকিলাব, ঢাকাটাইমস২৪.কম, দৈনিক জনকন্ঠ, চ্যানেল২৪ টিভি অনলাইন। নামের উপর ক্লিক করে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের খবরটি দেখতে পারেন।
ফ্যাক্ট চেক
গুগল রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছবিটি ২০১৮ সালের মে মাসে হন্ডুরাসের রাজধানী তেগুচিগাল্পার তোনকোন্টিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ের পাশে ছিটকে পড়ে একটি ব্যক্তিগত বিমান দুর্ঘটনার। এই ছবিটির চিত্রগ্রাহক হিসেবে নিজস্ব কর্মী জর্জ ক্যাবরেরা'র নাম উল্লেখ করেছে রয়টার্স (Credit: REUTERS/Jorge Cabrera)।
এই ঘটনার ছবি নিউজ উইক, ডেইলি মেইল সহ আন্তর্জাতিক অনেক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেখানেও ছবিটির ক্রেডিট হিসেবে রয়টার্সের জর্জ ক্যাবরেরা'র নাম উল্লেখ করা হয়েছে। দেখুন এখানে ও এখানে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার হাইতির রাজধানী থেকে উপকূলীয় শহর জ্যাকমেলে যাওয়ার সময় একটি ব্যক্তিগত বিমান বিধ্বস্ত হয়ে দুই মার্কিন নাগরিক'সহ ৬ জন নিহত হওয়ার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমন কিছু খবর দেখুন এখানে, এখানে।
সুতরাং প্রায় তিন বছরেরও বেশি পুরোনো ভিন্ন দেশের একটি বিমান দুর্ঘটনার ছবিকে সাম্প্রতিক একটি দুর্ঘটনার খবরের সাথে কোন ধরণের ক্যাপশন ছাড়াই প্রকাশ করা হচ্ছে, যা পাঠকদের জন্য বিভ্রান্তিকর।