"বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা বোর্ড" নামে একটি ফেসবুক পেইজ থেকে বুধবার সন্ধ্যায় নিচের কথাগুলো পোস্ট করা হয়েছে--
"ঈদের পর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।"
স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়ায় পোস্টটি সাথে সাথেই ভাইরাল হয়ে যায়। আধা ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছয় হাজারের বেশি মানুষ শেয়ার করেছেন এবং পনেরো হাজারের বেশি মানুষ রিয়েকশন দিয়েছেন।
ফ্যাক্ট চেক:
"ঈদের পর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে" আদৌ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে কিনা তা জানতে দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর খুজে দেখার চেষ্টা করে বুম বাংলাদেশ।
বাংলাট্রিবিউন গতকাল মঙ্গলবার একটি খবর প্রকাশ করে যার শিরোনাম "শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যা ভাবছে মন্ত্রণালয়"।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে--
"করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৬ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে নাকি ছুটি আরও বাড়ানো হবে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বাংলা ট্রিবিউনকে জানান।"
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে--
"ছুটির পর পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে খুলে দেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে যেতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ আগস্টের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো বা খোলার বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, 'সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা না করে কোনও সিদ্ধান্তে যাবে না মন্ত্রণালয়। তাছাড়া ৬ আগস্ট আসতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় বাকি রয়েছে। ঈদের পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।"
এই একই খবর আজ বুধবার কিছু অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকার নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার খবর কোনো সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে বুধবার রাত নাড়ে নয়টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকতা আবুল খায়েরের কাছে ফোন করা হলেও তিনি জানান, এমন কোনো সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু ছড়িয়ে থাকলে তা ভুয়া।
খবরটি ছড়ানো ফেসবুক পেইজটি ভুয়া:
ফেসবুকে যে পেইজ থেকে এই খবর পোস্ট করা হয়েছে সেটির নাম, "বাংলাদেশ জাতীয় শিক্ষা বোর্ড"।
https://www.facebook.com/educationboard.bd.01710112021/
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল খায়েরও।
পেইজটিতে ওয়েসবাইট হিসেবে দেয়া রয়েছে http://www.educationboard.com/ নামে একটি ডোমেইনের নাম; যাতে ক্লিক করলে ওয়েবসাইটটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।
বাংলাদেশে শিক্ষা বোর্ডগুলো বিভাগ ও কোনো ক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক। সেগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইটের ঠিকানা হচ্ছে: http://www.educationboard.gov.bd/
ফেসবুক পেইজে একটি মোবাইল নম্বর (01710-112021) দেয়া রয়েছে, যাতে কল করলে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি জানায়, "দুঃখিত, আপনার ডায়াল করা নম্বরটি আর ব্যবহৃত হচ্ছে না"।