সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে দাবি করা হচ্ছে, নেদারল্যান্ডস সরকার আইন প্রণয়ন করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে 'গীতা' পড়া বাধ্যতামূলক করেছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
৩০ অক্টোবর "Atanu Samanta" নামের একটি আইডি থেকে একটি ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "নেদারল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা ১ কোটি ৭০ লক্ষ। সেখানে হিন্দু মাত্র ২ লক্ষ ১৫ হাজার! অথচ সরকার আইন প্রণয়ন করে পঞ্চম শ্রেণী থেকে 'গীতা' পড়া বাধ্যতামূলক করলো!! কারণ গীতা পড়লে মানসিক বিকাশ ঘটবে..."
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, একই দাবিতে খবরটি আগেও ছড়ানো হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এরকম একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, নেদারল্যান্ডস সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের পদক্ষেপের নেয়ার বিশ্বাসযোগ্য কোনও সূত্র বা গণমাধ্যমের প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বরং সার্চ করার পর দেখা গেছে, নেদারল্যান্ডস সরকারের ওয়েবসাইটের শিক্ষা বিষয়ক অংশে বাধ্যতামূলক বিষয়ের তালিকায় 'গীতা' বা অন্য কোন ধর্মীয় পুস্তক সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করা নেই।
তবে জনসাধারণের জন্য পরিচালিত সরকারি স্কুলে ধর্ম বা নীতি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না করা হলেও, বেসরকারি স্কুলে সেরকম কোনও বিধিনিষেধ নেই। অভিভাবকরা চাইলে অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে কোন ধর্মীয় বিষয় পড়ানোর আবেদন জানাতে পারেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
'দ্য হিন্দু পার্সপেক্টিভ' নামে একটি ওয়েবসাইটের ২০১৩ সালের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নেদারল্যান্ডসে হিন্দু জনসংখ্যা প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ। যাদের বেশিরভাগই দেশটির 'হেগ' শহরে বসবাস করে। সেদেশের সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত মোট পাঁচটি হিন্দু প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে এবং সরকারি পাঠ্যসূচি মেনেই এই প্রতিষ্ঠানগুলো হিন্দু সম্প্রদায় দ্বারা পরিচালিত হয়।
অর্থাৎ নেদারল্যান্ডস সরকার আইন প্রণয়ন করে পঞ্চম শ্রেণি থেকে 'গীতা' পড়া বাধ্যতামূলক করার ভিত্তিহীন খবর প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।