সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পৃথক আইডি থেকে দু'টি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, এক মাস সময় নিয়ে মাটির ফ্রিজটি বানানো হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে। ইনস্টাগ্রামে প্রচারিত এরকম দুইটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
গত ১৭ মে 'Easmita Jahan 10' নামের পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে বলা হয়, "অনেক টা সময় নিয়ে মাটির ফ্রিজ বানানো হয়েছে ............."। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
একই রকম দাবিতে প্রচারিত আরেকটি ছবি দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ছবি দু'টি বাস্তবিক নয়। অর্থাৎ ছবি দু'টি বাস্তব কোনো দৃশ্যের নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবি দু'টি তৈরি করা হয়েছে।
আলাদাভাবে ছবি দু'টি ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিটির বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ছবি দুটি পর্যবেক্ষণ করে বাস্তব ছবির বৈশিষ্ট্যের সাথে সাংঘর্ষিক ও এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
এ কারণে এআই ছবি শনাক্তের টুলস 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবি দুইটি যাচাই করা হয়। টুলসটি উভয় ছবিকেই সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। উভয় ছবির ফলাফলের কোলাজ স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুলস 'ইজ ইট এআই' ব্যবহার করে ছবি দুইটি যাচাই করা হয়। টুলসটি উভয় ছবিকেই সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। উভয় ছবির ফলাফলের কোলাজ স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য ছবিটির বিষয়ে ভারতের কেরালার মাতৃভূমি মিডিয়া স্কুল এর ডিন সাজান কুমার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, ছবি দুইটি এআই জেনারেটেড। প্রাথমিকভাবে এআই দ্বারা তৈরি ইমেজ শনাক্ত করার জন্য বিভিন্ন নির্দেশক চিহ্নের সন্ধান করা যেতে পারে। সুতরাং ভিজ্যুয়াল অ্যানালাইসিস একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
তিনি আরো জানান, জেনারেটিভ এআই মডেলগুলি কখনও কখনও সূক্ষ্ম বিবরণ ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে সফল হয় না। যেমন; চুলের টেক্সচার, চোখের প্রতিফলন বা দাঁতের সারিবদ্ধতার মতো জটিল প্যাটার্ন। সাধারণ আরো কিছু সমস্যার মধ্যে রয়েছে বিকৃত বা অত্যধিক মসৃণ টেক্সচার, অপ্রাকৃতিক ছায়া, এমন আলো যা দৃশ্যের সাথে মেলে না। এআই দ্বারা তৈরি চিত্রগুলিতে পুরোপুরি প্রতিসম বৈশিষ্ট্য বা পুনরাবৃত্তির প্যাটার্ন থাকতে পারে যা অপ্রাকৃতিক লাগতে পারে।
অর্থাৎ আলোচ্য ছবি দুইটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই নির্মিত ছবিকে বাস্তব ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।