সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক ভাইরাল পোস্টে বলা হচ্ছে, কর্নাটকের আদালত শিক্ষাঙ্গনে নারীদের হিজাব পরার পক্ষে রায় দিয়েছে। দেখুন এমন কিছু পোস্টের লিংক এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি 'bdview24.com' নামের পেজ থেকে একটি খবর পোস্ট করা হয় যেখানে বলা হয়, 'কর্নাটক হাইকোর্টের রায়। হিজাব পরে শিক্ষাঙ্গনে যেতে পারবে মুসলিম মেয়েরা।' অর্থাৎ বলা হচ্ছে, ভারতের কর্নাটকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিক হিজাব বিতর্কে সেখানকার আদালত মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানের পক্ষে রায় দিয়েছে। দেখুন এমন দুটি পোস্টের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, কর্নাটকের আদালত কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধানের পক্ষে রায় দেয়ার খবরটি ভিত্তিহীন। ভারতের মূলধারার একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গতকাল (৯ ফেব্রুয়ারি) এনডিটিভিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের কর্নাটকে চলমান হিজাব বিতর্ক আদালতে গড়ালে সেটিকে উচ্চ আদালতে রাজ্যের প্রধান বিচারপ্রতির কাছে প্রেরণ করে কর্নাটকের স্থানীয় আদালত। উক্ত আদালতের বিচারক কৃষ্ণা এস দিক্ষিত বলেন, 'হিজাব সংক্রান্ত বিভিন্ন জরুরি বিতর্কের প্রশ্নে এই আদালত মনে করে, এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন'। অর্থাৎ কোনো রায় দেয়া থেকে বিরত ছিলেন সেই বিচারক। দেখুন এনডিটিভির সেই প্রতিবেদনটি--
এনডিটিভির প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
একই খবর প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক খবরমাধ্যম বিবিসি। সেখানে আরো বলা হয়, হিজাবের সমর্থনে দুইজন আন্দোলনকারীর পক্ষে স্থানীয় আদালতে পিটিশন দায়ের করা হলে বিচারক কৃষ্ণা দিক্ষিত সেটিকে উচ্চ আদালতে কর্নাটকের প্রধান বিচারপতি রিতু রাজ আওয়াস্থী বরাবর হস্তান্তর করেন। অর্থাৎ তিনি নিজ থেকে কোনো রায় দেননি। দেখুন বিবিসির সেই প্রতিবেদন এখানে--
বিবিসির প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, আজ ১০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটকের প্রধান বিচারপতি রিতু রাজের সমন্বয়ে গঠিত তিনজনের একটি বেঞ্চে অভিযোগটি শুনবেন। উক্ত বেঞ্চের বাকি দুজন বিচারপতি হলেন কৃষ্ণা দিক্ষিত এবং কাজী জয়বুন্নেসা মহিউদ্দিন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরমতে, কর্নাটকের উদুপি অঞ্চল থেকে এখন পর্যন্ত ১৮ জন শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে ৫টি পিটিশন দায়ের করা হয়েছে। দেখুন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরটি--
খবরটি পড়ুন এখানে।
দ্য ইন্ডিয়া টাইমসেও একই খবর প্রকাশিত হয়েছে আজ বেলা ১১ টা ৪০ এ। সেখানে আরো বলা হয়, তিনজন বিজ্ঞ বিচারকের বেঞ্চ গঠন হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কর্নাটকের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী বি সি নাগেশ। দেখুন ইন্ডিয়া টাইমসের খবরটি--
প্রতিবেদনটির লিংক এখানে।
অর্থাৎ ভারতের কর্নাটকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধানে সাম্প্রতিক বিতর্কের বিষয়ে সেখানকার কোনো আদালত থেকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
সুতরাং কর্নাটকের আদালত কর্তৃক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের হিজাব পরিধানের সমর্থনে রায় হওয়ার খবরটি ভিত্তিহীন।