সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি খবর শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ঢাকায় নির্মাণাধীন মেট্রোরেল প্রকল্পের যন্ত্রাংশ চুরির অপরাধে ১১ ভারতীয় নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে আরো বলা হয়, বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার না করার অনুরোধ করেছে ভারতীয় দূতাবাস। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর 'আলোচিত খবর।' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে তথ্যটি পোস্ট করা হয় যাতে লেখা "মেট্রোরেলের যন্ত্রাংশ চুরি করার অভিযোগে। র্যাবের হাতে ১১ জন ভারতীয় নাগরিক আটক! বিষয়টি মিডিয়ায় প্রচার না করার অনুরোধ ভারতীয় দূতাবাসের..." অর্থাৎ, পোস্টটিতে দাবি করা হচ্ছে মেট্রোরেলের যন্ত্রাংশ চুরি করার অভিযোগে গ্রেফতার ব্যক্তিরা ভারতীয় নাগরিক। দেখুন পোস্টটির স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি বিভ্রান্তিকর।
কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর, একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবরটি খুঁজে পাওয়া গেছে। তন্মধ্যে অনলাইন গণমাধ্যম জাগোনিউজ-এ ১৩ সেপ্টেম্বর "যেভাবে মেট্রোরেল প্রকল্পের মালামাল চুরি করতো সংঘবদ্ধ চক্র" শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে র্যাব-৪ এর অপারেশন অফিসার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলামের বরাত দিয়ে বলা হয় -
"রাজধানীর শাহ আলী এলাকা থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের মালামাল চুরির সংঘবদ্ধ চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। এ সময় চোরাই ১৮টি আইবিমসহ একটি ট্রাক, একটি প্রাইভেটকার ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়। সংঘবদ্ধ চক্রের ১১ সদস্যের মধ্যে মূল চোর চারজন। তারা হলেন- মো. মোতালেব শিকদার (৫৪), মো. নজরুল ইসলাম (৪৪), মো. হাবিব উল্লাহ ভূঁইয়া (৪৩) ও মো. ওয়ালীউল্লাহ ওরফে বাবু (৪১)। এ চক্রে দালাল পাঁচজন। তারা হলেন- সুমন ঘোষ (৪৩), আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪৮), মো. আ. ছাত্তার (৫৮), মো. আশিক (৩১) ও মো. আমজাদ হোসেন রাজন (৩৬)। মেট্রোরেলের চোরাই জিনিসপত্র কেনা দলে থাকেন দু'জন। তারা হলেন- মো. মনির (৪০) ও মো. রিয়াজুল (২০)।" তবে প্রতিবেদনটিতে এই গ্রেফতারকৃতদের জাতীয়তা বা ঠিকানা সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি।
এদিকে, র্যাবের হাতে ১১ জন ভারতীয় নাগরিক আটকের খবরটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বার্তা সংস্থা এএফপি'কে র্যাবের মুখপাত্র সাজেদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় গ্রেফতার সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এএফপি'কে র্যাবের এই মুখপাত্র বলেন , ''যদি কেউ দাবি করে থাকে যে তারা ভারতীয় নাগরিক তাহলে সেটা ভুয়া খবর। আমরা তাদেরকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছি এবং তারা সবাই বাংলাদেশি।' এএফপি'র প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
সুতরাং মেট্রোরেল প্রকল্পের মালামাল চুরির অভিযোগে র্যাব-৪ এর হাতে আটক ব্যক্তিদের ভারতীয় নাগরিক দাবি করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা ভিত্তিহীন।