সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে দৈনিক পত্রিকা ইত্তেফাককে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর 'সিলেট জেলা ছাত্রলীগ' নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করে বলা হয়, "ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস বাংলাদেশ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা অবৈধ পথে সড়িয়েছেনঃসুত্র দৈনিক ইত্তেফাক।"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। দৈনিক ইত্তেফাক বা অন্যান্য গণমাধ্যমে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার করার কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য পোস্টের দাবিটির সত্যতা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আলোচ্য তথ্যসম্বলিত কোনো সংবাদ দৈনিক ইত্তেফাকের ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে গত ১১ সেপ্টেম্বর অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজের ওয়েবসাইটে "ফ্যাসিবাদী সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ে: ড. ইউনূস" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, "জাতির উদ্দেশে ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছাড়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও, প্রথম আলো এবং চ্যানেল আই অনলাইনেও একই তথ্যসহ প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। তবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার করার কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, আলোচ্য তথ্যটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ইত্তেফাক ডিজিটালের নিউজ এডিটর রিজুয়ানা রিন্তীর সাথে যোগাযোগ করে বুম বাংলাদেশ। তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, ইত্তেফাক আলোচ্য পোস্টের তথ্যসম্বলিত কোনো সংবাদ প্রকাশ করেনি।
অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচারের তথ্যসম্বলিত কোনো সংবাদ ইত্তেফাক প্রচার করেনি। এছাড়াও, গনমাধ্যমেও আলোচ্য সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সুতরাং দৈনিক পত্রিকা ইত্তেফাকের বরাতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচারের ভুয়া সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।