ফেসবুকে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, গিনেস বুকে নাম লেখালেন বিখ্যাত ইসলামী বক্তা মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী।
'ভার্সিটি থেকে বলছি' নামের একটি পেইজ থেকে মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারীর ছবি দিয়ে একটি পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টে বলা হয়,
"গিনেস বুকে নাম লেখালেন মওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। মাত্র চার দিনে ৫ লাখ ৭৫ হাজার সাবস্ক্রাইবার। মাত্র একটি ইনটু ভিডিও দিয়ে ১৪ লাখেরও বেশি ভিউ। এটি ইউটিউব ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্বল্প সময়ে সাবস্ক্রাইব ভিউ"।
আরেকটি পোস্ট দেখুন এখানে।
এরকম আরও কিছু পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
উপরে উল্লিখিত পোস্টগুলোতে দুটি দাবি করা হয়েছে।
প্রথমত, "গিনেস বুকে নাম লেখালেন মওলানা মিজানুর রহমান আজহারী" কথাটি বানোয়াট। গিনেজ রেকর্ড বুক কর্তৃপক্ষ এমন কোনো ঘোষণা/বিবৃতি দেয়নি। তাদের ওয়েবসাইট www.guinnessworldrecords.com-এও এমন কোনো তথ্য নেই।
দ্বিতীয়ত, বলা হয়েছে "এটি ইউটিউব ইতিহাসে সর্বোচ্চ স্বল্প সময়ে সাবস্ক্রাইব ভিউ"।
এটিও ভুয়া দাবি।
অনুসন্ধানে দেখা যাচ্ছে, মিজানুর রহমান আজহারির সদ্য খোলা ইউটিউব চ্যানেলটিতে যে গতিতে সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত গতি সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধি পাওয়া অন্যান্য ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে।
যেমন ইউটিউবের বিভিন্ন ডাটা মনিটর করে এমন একটি ওয়েবসাইট fandom.com-এ দেখা যাচ্ছে, একদিনে একটি ইউটিউব চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক সাবস্ক্রাইবার বৃদ্ধির রেকর্ড হচ্ছে Marília Mendonça নামে একজন ব্রাজিলিয়ান গায়িকার। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে একদিনে তার চ্যানেলে ১৮ লাখ মানুষ সাবস্ক্রাইব করেন।
গিনেজ রেকর্ডসের তালিকায় একদিনে সর্বোচ্চ ভিউ হওয়া একটি ভিডিও সম্পর্কে জানা যায় যা মূলত কোরিয়ান একটি গান। ২২ আগস্ট ২০২০ এ প্রকাশিত ভিডিওটি একদিনে দেখা হয় ১০ কোটি বার। কিন্তু গত ১৬ ডিসেম্বরে চালু করা মিজানুর রহমান আজহারীর চ্যানেলে আপলোড করা একমাত্র ভিডিওতে এখন পর্যন্ত (২৪ ডিসেম্বর, রাত ৮টা) সর্বমোট ভিউ ১৬ লাখ ৫৭ হাজার ৪০৮। (যদিও সেই ভিডিওটি ঘোষণা দিয়ে সরিয়ে নেয়া হয় উক্ত চ্যানেল থেকে) ফলে তা ইউটিউবের ভিউ এর ইতিহাসের সর্বোচ্চ নয়।
এছাড়া আরেকটি চ্যানেলের খোঁজ পাওয়া যায়, সেটি এক সপ্তাহে প্রায় ৫৭ লাখ সাবস্ক্রাইবার পেয়েছে। কিন্তু মিজানুর রহমান আজহারীর চ্যানেলটির শুরু থেকে আজ ২৯ ডিসেম্বর ১৩ দিনে সাবস্ক্রাইবার অর্জন করেছে সাড়ে আট লাখের মতো। ফলে ইউটিউব সাবস্ক্রিপশন এবং ভিউ এর হিসেবে মিজানুর আজহারীর চ্যানেলটি ইউটিউব ইতিহাসে সর্বোচ্চ নয়।