ফেসবুকে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে যাতে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের মোট ৬৫০ থানার মধ্যে ৫১২ টি থানা ওসি হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
ভাইরাল হওয়া এমন কয়েকটি পোস্ট আর্কাইভ করা হয়েছে এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
দেখুন স্ক্রিনশট--
এই তথ্যটির সঠিকতা যাচাইয়ে বুম বাংলাদেশ পুলিশ সদরদপ্তরে যোগাযোগ করে। সংস্থাটির জনসংযোগ দফতরে একাধিকবার ফোন করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি সোহেল রানাকে কল করা হলেও তিনিও রিসিভ করেননি।
এরপর যোগাযোগ করা হয় ডিএমপির সহকারী কমিশনার রেফাতুল ইসলামের। তিনি বলেন, এটি সম্পূর্ণ গুজব। এছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাদের ধর্মীয় পরিচয় ভিত্তিক কোনো পরিসংখ্যান রাখা হয় না বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের সবগুলো থানার ওসি'দের (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নামের তালিকা ওপেন সোর্স কোনো মাধ্যমে নেই। পুলিশ সদরদপ্তর থেকে এ ধরনের তালিকা পাওয়া যাবে কিনা জানতে চাওয়া হলে রেফাতুল ইসলাম জানান, এটা সদরদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা বলতে পারবেন। ডিএমপির কাছে এমন কোনো তালিকা নেই।
এরপর আমরা চেষ্টা করেছি বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি জেলার সবক'টি থানার বর্তমান ওসিদের নামের তালিকা সংগ্রহ করতে। সিলেট বিভাগের চারটি জেলার ৪৫টি থানা, বরিশাল বিভাগের ৫টি জেলার ৫৩টি থানা, ঢাকা মেট্রোপলিটনের ৫০টি থানা এবং ঢাকা বিভাগের অন্য দুটি জেলা নারায়ণগঞ্জ এবং গোপালগঞ্জের ১২টি থানার ওসিদের নাম সংগ্রহ করা হয়েছে। অর্থাৎ, মোট ১৬০টি থানার ওসির নাম সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।
নাম সংগ্রহের পদ্ধতি ছিলো, বিগত তিন মাসে (বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিগত এক মাসে) ওইসব থানা সংক্রান্ত বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে ওসি হিসেবে যাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে তাদেরকে 'বর্তমান ওসি' হিসেবে ধরা হয়েছে। যদিও এর মধ্যে অল্প কিছু থানায় এই চার মাস সময়ে ওসি পদে রদবদল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আমাদের সংগৃহীত নামের এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটনের ৫০ থানায় মোট তিন জন ওসি হিন্দু ধর্মাবলম্বী হিসেবে পাওয়া গেছে।
আর ঢাকার বাইরের ১১০ থানায় পাওয়া গেছে ৮ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ওসির নাম। এর মধ্যে সিলেট জেলায় তিন জন, মৌলভীবাজার জেলায় একজন, বরিশাল জেলায় তিনজন এবং ভোলা জেলায় একজন।
ভাইরাল হওয়া খবর মতে, ৬৫০ থানার মধ্যে ৫১২টিতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি বর্তমানে ওসির দায়িত্বে থাকলে মুসলিম ধর্মাবলম্বী ওসির সংখ্যা ১৩৮ জন হওয়ার কথা। কিন্তু বিক্ষিপ্তভাবে আমাদের সংগৃহীত ১৬০ জন ওসির মধ্যে ১১ জন হিন্দু এবং ১৪৯ জন মুসলিম পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, ভাইরাল হওয়া পোস্টটির দাবি ভুয়া।