সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে, ১ জুলাই থেকে চলামান সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন পুনরায় বাড়ানো হয়েছে মর্মে একটি খবর প্রচার করা হচ্ছে। দেখুন এমন কিছু পোস্টের লিংক এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩ জুলাই 'Jagoronnews.com' নামের একটি ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে লেখা হয়, "ব্রেকিংঃ ফের সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা"। হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের ওই খবরটিতে বলা হয়,
"প্রাঙ্গাহতি ক'রো'না ভাই'রাসের মৃ'ত্যু ও সংক্রামন রোধে সারাদেশে চলছে সাতদিনের সর্বাত্মক লকডাউন। যদিও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ১৪ দিনের লকডাউনের পরাম'র্শ দিচ্ছেন। তাদের মতে, লকডাউনের সুফল দুই এক দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে না। এজন্য ভাই'রাসের সুপ্তিকাল পর্যন্ত অ'পেক্ষা করতে হবে।"
অনলাইন পোর্টালের খবরটির স্ক্রিনশট দেখুন-
খবরটির ডেটলাইনে প্রকাশের সময় লেখা আছে '৩ জুলাই' এবং চলমান সাত দিনের লকডাউনের কথাও উল্লেখ করা আছে। অর্থাৎ, প্রকাশের তারিখ ও বর্ণনা দেখে বোঝা যায়, খবরটিতে গত ১ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য থেকে চলমান কঠোর বিধি-নিষেধ বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে।
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, চলমান সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া সংক্রান্ত খবরটি বিভ্রান্তিকর। খবরটির শিরোনামে সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হলেও মূল খবরে এ রকম কোন তথ্য নেই। বরং খবরটির ভিতরে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বরাতে ১৪ দিনের লকডাউনের পরামর্শের কথা বলা হয়েছে।
গুগল সার্চের মাধ্যমে দেখা গেছে, খবরটিও কপি করা। মূলত, গত ৩ জুলাই 'সর্বাত্মক লকডাউন ১৪ দিন দেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের' শিরোনামে সম্প্রচার মাধ্যম 'চ্যানেল টুয়েন্টিফোর' টিভির অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কিছু শব্দ পরিবর্তন করে হুবহু কপি করে, কপিরাইট এড়াতে বাক্য ও শব্দের মাঝে অযাচিত যতি চিহ্ন দিয়ে বিভ্রান্তিকর শিরোনামে অনলাইন পোর্টালগুলোতে প্রকাশ করা হচ্ছে। channel24bd.tv-এর মূল প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
পাশাপাশি, বুম বাংলাদেশ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মূলধারার কোন গণমাধ্যমে সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সংক্রান্ত কোন খবর খুঁজে পায়নি।
তবে, গত ২৮ জুন দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে "১ জুলাই থেকে ঘর থেকেও বের হওয়া যাবে না, টহলে থাকবে সেনাবাহিনী" শিরোনামে প্রকাশিত খবরে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের বরাত দিয়ে জানানো হয় , ১ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে ৭ জুলাই রাত ১২ পর্যন্ত কঠোর বিধি-নিষেধ থাকবে। প্রয়োজন মনে হলে এই বিধি-নিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়তে পারে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। কিন্তু তার আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনো সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।
সুতরাং, চটকদার শিরোনামে সর্বাত্মক লকডাউন বাড়ানোর যে খবর প্রচার করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর।