HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

চাঁদপুরে হিন্দু কিশোরী ধর্ষিত হওয়ার ভিত্তিহীন খবর ভাইরাল

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ ও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হাজীগঞ্জ উপজেলা শাখা উভয়েই খবরটি ভিত্তিহীন বলে চিহ্নিত করেছেন।

By - Md Abdullah Khan | 16 Oct 2021 11:24 PM IST

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে দশ বছরের মেয়ে সহ একটি হিন্দু পরিবারের সদস্য তিন নারী ধর্ষিত হয়েছে এবং দশ বছরের মেয়েটি এরইমধ্যে মারা গেছে এমন একটি খবর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। চাঁদপুরের সাথে কেউ নোয়াখালীতেও হিন্দু কিশোরী ধর্ষণ ও নিহতের ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করে পোস্ট করেছেন। এমন কিছু ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানেএখানে, এখানেএখানে

গত ১৫ অক্টোবর "Dalton Souvato Heera" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্টে বলা হয়,--

"নারী ধর্ষনের সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনাটি জানলাম একটু আগে।

নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ গত আড়াই দিনে যথেষ্ট পরিমানে হয়েছে।বেশির ভাগ ঘটনা গুলোই চেপে যাওয়া হয়েছে চক্ষু লজ্জার ভয়ে।

সবচেয়ে ভয়ংকর ঘটনাটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে।ধর্ষিত হয়েছেন একই পরিবারের,মা, মেয়ে,বোনের মেয়ে।ধর্ষিত বোনের মেয়েটির বয়স দশ।

আপাতত গা গুলিয়ে উঠছে।ভিটকিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ হয়েছে।নিরাপদ স্থানেই নেয়া হয়েছে তাদের।

(ভিকটিমের নাম কি,ঘটনার অথেনটিক সোর্স কি ইত্যাদি জিজ্ঞেস করে ধর্ষিতা পরিবার টিকে আরো হেনস্থা না করার জন্য আমার অতি উৎসাহী বন্ধুদের অগ্রীম ধন্যবাদ।সময় মত জানতে পারবেন)" 

পোস্টটি দেখুন এখানে এবং আর্কাইভ দেখুন এখানে

অর্থাৎ, পোস্টদাতা খবরটি সূত্রহীনভাবে প্রচার করছেন এবং ভিকটিম সম্পর্কেও বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি। কেবল বলা হয়েছে ঘটনাটি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের। এছাড়াও বেশ কিছু পোস্টে 'ধর্ষনের' দাবির সাথে নামে-বেনামে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার দাবি করেও পোস্ট করছেন। উল্লেখ কোনো পোস্টেই সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। একই দাবিতে খবরটি ইংরেজি ভাষায়ও ছড়ানো হয়েছে। দেখুন এরকম দুটি পোস্টের স্ক্রিনশট--

পোস্টটি দেখুন এখানে এবং আর্কাইভ দেখুন এখানে

একই দাবিতে করা আরেকটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন-

পোস্টটি দেখুন এখানে

ফ্যাক্ট চেক

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সম্প্রতি নোয়াখালী কিংবা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে সনাতন ধর্ম হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ ধর্ষিত হওয়ার খবরটি ভিত্তিহীন। চাঁদপুরের জেলাপ্রশাসক ও স্থানীয় পুলিশ ও পূজা উদযাপন পরিষদ খবরটিকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে চিহ্নিত করেছেন।

প্রথমে নানাভাবে সার্চ করে ধর্ষিত হওয়া সংক্রান্ত কোন খবর বুম বাংলাদেশ দেশের মূলধারার কোন গণমাধ্যমে খুঁজে পায়নি। পরে বরং অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম জাগোনিউজ ডটকমে আজ ১৬ অক্টোবর "হাজীগঞ্জে শিশু ধর্ষণ-মৃত্যুর ঘটনা গুজব: পূজা উদযাপন পরিষদ" শিরোনামে প্রকাশিত খবরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের বরাতে হাজীগঞ্জের ধর্ষণ-মৃত্যুর ভাইরাল দাবিটিকে 'অসত্য ও গুজব' বলে চিহ্নিত করতে দেখা যায়।

খবরটির আর্কাইভ দেখুন এখানে

খবরে হাজীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহিদাস বণিক-এর এক ভিডিওবার্তায় বরাত দিয়ে লেখা হয়-

,"কতিপয় কুচক্রী মহল হাজীগঞ্জে নারী ও শিশুর শ্লীলতাহানি ঘটেছে বলে এক ধরনের গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে। তবে এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, জাতীয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বা বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের কোনো নেতৃবৃন্দ অবগত নয়। অতএব সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ধরনের গুজব পরিহার করার জন্য অনুরোধ করছি।"

 সামাজিক মাধ্যমে হাজীগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহিদাস বণিক-এর ভিডিওটিও খুঁজে পেয়েছে বুম বাংলাদেশ। দেখুন--

Full View

জাগোনিউজ ডটকমের খবরে আরোও লেখা হয়-

"হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শোয়েব আহমেদ চিশতী জাগো নিউজকে বলেন, 'খবরটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আমি বেশ কয়েকবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নথিপত্র খুঁজেছি। তবে এ ধরনের কোনো রোগী আমাদের হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়নি। তার কোনো রেকর্ড নেই। আমি কিছুক্ষণ আগেও পুনরায় পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। কিন্তু এমন কোনো কিছু পাইনি।'

জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, 'হাজীগঞ্জে যদি এই ধরনের কোনো ঘটনা হতো তাহলে অবশ্যই তা আমি অবগত হতাম। যেহেতু এই বিষয়ে এখনো আমি কিছু জানি না, সেহেতু মনে হয় না যে এ ধরনের কিছু হয়েছে। হলে আমি অবশ্যই জানতে পারতাম।'

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ বলেন, 'এ বিষয়ে থানায় এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। যতটুকু জেনেছি এ ধরনের কোনো ঘটনা হাজীগঞ্জ ঘটেনি। বিষয়টি গুজব।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ জাগো নিউজকে বলেন, 'বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। ইতোমধ্যে উপজেলার সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং নেতারা নিশ্চিত করেছেন।'"

খবরটি দেখুন এখানে

অর্থাৎ হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শোয়েব আহমেদ চিশতী, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল ঘোষ, হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুনুর রশিদ সকলেই ধর্ষণের দাবিটিকে অসত্য বলে চিহ্নিত করেছেন। 

পাশাপাশি, মূলধারার আরেকটি গণমাধ্যম দৈনিক যুগান্তরও জাগোনিউজ ডটকম অনুরূপ সূত্র উল্লেখ করে ভাইরাল পোস্টের দাবিটি সত্য নয় বলে খবর প্রকাশ করেছে। এ সম্পর্কে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত আরও একটি খবর দেখুন এখানে। দৈনিক যুগান্তরের খবরের স্ক্রিনশট দেখুন-

খবরটির আর্কাইভ দেখুন এখানে

সম্প্রচার মাধ্যম রেডিও টুডে, একাত্তর টেলিভিশন এবং দি নিউ নেশনের চাঁদপুর প্রতিনিধি ও স্থানীয় চাঁদপুর জেলা প্রেসক্লাবের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক কাদের পলাশ বুম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, ফেসবুকে এমন একটি দাবি ভাইরাল হওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে তিনি কথা বলেছেন। সবাই ঘটনাটিকে ভিত্তিহীন ও গুজব বলে চিহ্নিত করেছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে বিষয়টিকে খুব স্পর্শকাতর হওয়ায় বুম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এনিয়ে আরো নিশ্চিত হতে যোগাযোগ করা হয় চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদের সাথে। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হিন্দু পরিবারের কাউকে ধর্ষণ কিংবা হত্যার খবরটিকে "ফেক নিউজ" অর্থাৎ ভুয়া খবর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। 

তবে বুম বাংলাদেশ ভাইরাল পোস্টে কেবল হাজীগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের 'একই পরিবারের, মা, মেয়ে, দশ বছর বয়সী শিশুর ধর্ষণ- হত্যার' দাবিটিই অসত্য বলে চিহ্নিত করেছে, অন্যান্য পোস্টে বিভিন্ন ব্যক্তি নিহত হওয়ার যে দাবি করা হচ্ছে তা আলাদা ভাবে যাচাই করেনি ও সে সম্পর্কে সিদ্ধান্তও দেয়নি।

অর্থাৎ কোনো সুত্র উল্লেখ ছাড়াই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের একই পরিবারের, মা, মেয়ে, দশ বছর বয়সী শিশুর ধর্ষণ-হত্যার ভিত্তিহীন খবর প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে। 

Tags:

Related Stories