সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম গ্রেফতার হয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৭ অক্টোবর 'সুলতানা ফারিয়া' নামে একটি ফেসবুক পেজে পোস্ট করে বলা হয়, "রাতেই রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান এর নির্দেশে গ্রেফতার হলেন সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম, এদিকে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের জন্য হাইকোর্ট এলাকা ঘেরাও করলে গণপিটুনি খায় সমন্বয়করা। গ্রেফতার সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। গ্রেফতার সমন্বয়ক সারজিস আলম। সেনাবাহিনীর হাতে আটক। ..." ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলমকে গ্রেফতারের কোন সংবাদ গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও, তাদের দুজনকেই সামাজিক মাধ্যমে উপস্থিত থাকতে এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের আপডেট দিতে দেখা গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে তাদেরকে গ্রেফতারের কোনো সংবাদ গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে হাসনাত আব্দুল্লাহর ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টে গত ২ নভেম্বর করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে দেবিদ্বার উপজেলায় শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের মাঝে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় সর্বমোট ৩৯ লক্ষ টাকা আর্থিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভা এবং ফ্যাসিবাদ পরবর্তী আগামীর দেবিদ্বার নিয়ে জনগণের ভাবনা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।" আলোচ্য ফেসবুক পোস্টটি করা হয় ১৭ অক্টোবর, অথচ ২ নভেম্বর করা ফেসবুকে পোস্টের ছবিতে কুমিল্লায় এক অনুষ্ঠানে হাসনাত আব্দুল্লাহকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। অর্থাৎ তাঁর গ্রেফতার হওয়ার খবরটি সঠিক নয়। পোস্টটি দেখুন--
এদিকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সারজিস আলমের ফেসবুক একাউন্টে গত ৪ নভেম্বর করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনির আখড়া, চিটাগাং রোড! ২৪ এর ছাত্র জনতার অভ্যুথানের রক্তক্ষয়ী রণক্ষেত্র ! সেই সহযোদ্ধাদের জনস্রোতের সাথে আজকের কিছু স্মৃতি... ১.ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, ২. সামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, ৩.দারুননাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা, ৪.জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া (যাত্রাবাড়ী বড় মাদ্রাসা), ৫.দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ৷" ৪ নভেম্বর করা ওই ফেসবুক পোস্টে সারজিস আলমকে উপস্থিত থাকতে এবং বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। অর্থাৎ তাঁর গ্রেফতার হওয়ার খবরটিও সত্য নয়। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টগুলোতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম গ্রেফতার হয়েছে বলে দাবি করা হলেও তাদের দুজনকে নিয়মিত জনসম্মুখে আসতে এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। এমনকি, সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি গণমাধ্যমেও হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
সুতরাং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম গ্রেফতার হওয়ার ভুয়া দাবি প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।