সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভারতের আগ্রার একটি কলেজের নাম সম্বলিত একটি লেটারহেডে লেখা একটি নোটিশের ছবি ছড়ানো হচ্ছে।
ছবিতে দেখা যায় নোটিশটিতে লেখা- "It is mandatory for all girls to have at least one boyfriend by 14 February. This has been done for security purposes. Single girl will not be allowed to enter into college premises. They'll have to show a recent picture with their boyfriend. Spread love."
অর্থাৎ ১৪ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে সকল ছাত্রীর প্রত্যেকের একজন করে বয়ফ্রেন্ড থাকা আবশ্যক। সিঙ্গেল ছাত্রীদের কলেজে ঢুকতে দেয়া হবে না। একই সাথে সকল ছাত্রীকে বয়ফ্রেন্ডের সাথে তোলা সাম্প্রতিক একটি ছবি দেখাতে হবে। ফেসবুকে ছড়ানো ছবিটি অনুযায়ী নোটিশটি কলেজের সহকারী ডিন অধ্যাপক আশীষ শর্মার স্বাক্ষরসহ ১৪ জানুয়ারী টাঙ্গানো হয়।
ভাইরাল হওয়া ছবিটির রিভার্স ইমেজ অনুন্ধানে দেখা যায় ভারতেও একইভাবে ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে।
এরই প্রেক্ষিতে কলেজটির পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ অধ্যাপক এস পি সিংয়ের স্বাক্ষর সম্বলিত আরেকটি নোটিশ দিয়ে ফেসবুকে ছড়ানো নোটিশটি বেআইনী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের নয় বলে জানানো হয়। অধ্যাপক এস পি সিং জানান, ভাইরাল হওয়া নোটিশে আশিস শর্মা নামে যে ব্যক্তির স্বাক্ষর দেখা যাচ্ছে সেই নামের কোনো শিক্ষক কলেজটিতে নেই।
কলেজের সম্মান হানি করতেই কেউ এই অপচেষ্টা চালিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। পরবর্তীতে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়। সেই সাথে ছাত্র ছাত্রীদেরকেও এরকম অসমর্থিত কোন সূত্রের নোটিশ আমলে না নেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়
। প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ ও ভারতের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের সূত্রে নোটিশটির ছবি পাওয়া যায়।ভারতের মূলধারার সংবাদ মাধ্যমেও বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন করা হয়েছে। দেখুন
এখানে ও
এখানে।
উল্লেখ্য, আগ্রার সেন্ট জন'স কলেজ ১৮৫০ সালে বৃটিশদের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত পুরনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এদিকে বাংলাদেশি কিছু অনলাইন সংবাদমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে "ভালোবাসা দিবসে বয়ফ্রেন্ড ছাড়া কলেজে ঢুকতে মানা!" শিরোনামে।
সময় টিভির এই এই শিরোনামের প্রতিবেদনটির তৃতীয় প্যারায় গিয়ে লেখা হয়েছে "ওই নোটিশটি ভুয়া"। দেখুন স্ক্রিনশট--
যারা তৃতীয় প্যারা পর্যন্ত খবরটি পড়বেন না তারা ধরে নিতে পারেন যে, "ভালোবাসা দিবসে বয়ফ্রেন্ড ছাড়া কলেজে ঢুকতে মানা" করে আসলেই নোটিশ দেয়া হয়েছে। সময় টিভির প্রতিবেদন থেকে এমন ভুল ধারণা পেয়ে সেটি আবার ফেসবুকে ছড়াচ্ছেন অনেকে- তেমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। যেমন নিচের স্ক্রিনশটটি দেখুন। অনেকেই "ভালোবাসা দিবসে বয়ফ্রেন্ড ছাড়া কলেজে ঢুকতে মানা: সূত্র সময় টিভি" লিখে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
নিচের স্ক্রিনশটটিও দেখুন-
অর্থাৎ, সময় টিভি তাদের প্রতিবেদনের ভেতরে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে "নোটিশটি ভুয়া" বললেও খবরটির উপস্থাপনার কৌশলের কারণে অনেক মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ভুল খবরটিকে সঠিক মনে করছেন।