সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের ৪একাধিক আইডি পেজ ও গ্রুপে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, চট্টগ্রামে ১৯ জন হিন্দুধর্মাবলম্বী নিহত হয়েছেন। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
কয়েক ঘন্টা আগে 'Nirob Kumar Das' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে পোস্ট করে বলা হয়, "চট্টগ্রামে নিহত -১৯ সনাতনী😭, আহত-৯৫০ +😭"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। চট্টগ্রামে আদালতের সামনে সংঘর্ষের ঘটনায় সনাতন সম্প্রদায়ের কেউ মারা যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন। এছাড়া গণমাধ্যম ও অন্যকোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রেও চট্টগ্রামে সনাতন সম্প্রদায়ের কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য সংবাদের সত্যতা জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো হিন্দুধর্মাবলম্বীর মৃত্যুর সংবাদ মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
পরবর্তীতে, আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে গত ২৬ নভেম্বর "চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে চিন্ময় অনুসারীদের সংঘর্ষ, আইনজীবীকে হত্যা" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। আইনজীবীর নাম সাইফুল ইসলাম, যিনি মুসলিম। তবে এই প্রতিবেদনে বা অন্য কোনো মাধ্যমেও কোনো হিন্দুধর্মাবলম্বীর মৃত্যুর তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে, আলোচ্য দাবিটির সত্যতা জানতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ আহসান হাবিব পলাশের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বুম বাংলাদেশকে জানান, আলোচ্য দাবিটি সম্পূর্ণ অসত্য। এরকম কোনো ঘটনা চট্টগ্রামে ঘটেনি।
এছাড়াও, আলোচ্য দাবির প্রেক্ষিতে দাবিটির সত্যতা জানতে ইস্কন বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি চারু চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করে বুম বাংলাদেশ। চারু চন্দ্র দাস জানান, চট্টগ্রাম কোর্টে এমন কোনো ঘটনার কথা বা তথ্যের ব্যাপারে তিনি শুনেননি।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ জন হিন্দুধর্মাবলম্বীর মৃত্যুর তথ্যটি অসত্য এবং বানোয়াট।
সুতরাং, চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষের ঘটনায় ১৯ জন হিন্দুধর্মাবলম্বীর মৃত্যুর অসত্য তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।