সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একজন নারীর ছবি দিয়ে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করা হচ্ছে। দেখুন এমন তিনটি পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৭ জানুয়ারি 'প্রিয় আজহারী গ্রুপツ' নামের গ্রুপে একজন নারী এবং একটি মেডিকেল এক্সরে'র ছবি দিয়ে দাবি করা হয়, নারীটির নাম ফাতেমা এবং তার বোনের নাম হাফেজা তানিয়া আক্তার তন্নী। এছাড়া সেখানে আরো বলা হয়, অসুস্থ নারীটির বাড়ি কুমিল্লা মুরাদনগর এবং তার পিতার নাম মৃত শাহজাহান। আরো উল্লেখ করা হয় মেয়েটি কুমিল্লা শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে। পোস্টটির সাথে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ নম্বরও যুক্ত করা হয়েছে। দেখুন পোস্টটির স্ক্রিনশট–
পোস্টটির সাথে যুক্ত ছবিটি আলাদাভাবে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আর্থিক সাহায্য চাওয়ার এই পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। একাধিক উৎস থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি ভিন্ন এক নারীর। দৈনিক প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত 'শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগেই কেয়াকে যেতে হলো হাসপাতালে' শিরোনামে এক প্রতিবেদনে আসল ছবিটি পাওয়া গেছে। ২০১৫ সালের ২০ জুলাই প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কেয়ার ছবি এটি। আরো বলা হয়, ২২ বছর বয়সী কেয়া খাতুন রাজবাড়ী সরকারি কলেজে ম্যানেজমেন্ট বিভাগ থেকে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। তার বাবা রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেনির কর্মচারী। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
এছাড়া ২০১৫ সালে ফেসবুকে একাধিক আইডি থেকেও তার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করা হয়েছিল। দেখুন এমন একটি পোস্ট--
একই ছবি দিয়ে ২০১৫ সালে অসুস্থ কেয়ার জন্য সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। এরকম একটি পোস্ট দেখুন--
পরবর্তীতে একই কেয়াকে নিয়ে আরেকটি প্রতিবেদন করে দৈনিক প্রথম আলো। ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫'তে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, নানা আয়োজন শেষে সে বছরের ২৯ জুলাই শরীরে ব্লাড ক্যানসার (এএমএল) বাসা বাঁধা কেয়াকে নিয়ে যাওয়া হয় ভারতে। মুম্বাইতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে চলছে কেয়ার চিকিৎসা। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
প্রতিবেদনটি পড়ুন এখানে।
সুতরাং ২০১৫ সালে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রাজবাড়ির মেয়ে কেয়াকে সম্প্রতি কুমিল্লার ফাতেমা বলে ফেসবুকে দাবি করা হচ্ছে। তবে ফাতেমা নামে কোনো মেয়ে কুমিল্লা শিশু হাসপাতালে হার্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পারেনি বুম বাংলাদেশ।
অর্থাৎ পুরোনো ঘটনার ভিন্ন নারীর ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে, যা বিভারন্তিকর এবং প্রতারণাপূর্ণ।