সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি খবরের স্ক্রিনশট ও ফটোকার্ড পোস্ট করে বলা হচ্ছে, কোটা আন্দোলনকারীদের হামলায় মানিকগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
আজ ১৬ জুলাই 'Aminul Islam' নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে বলা হয়, "কোটা আন্দোলনকারী স্বঘোষিত রাজাকাররা আমাদের ভাইকে হত্যা করেছে। ওদের বিচার এই দেশের মাটিতে হবে"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। মানিকগঞ্জের শিবালয়ে নিহত ছাত্রলীগ নেতা রাকিব কোটা আন্দোলনকারীদের হামলায় নয় বরং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় গত ৭ জুলাই গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। পরে গতকাল ১৫ জুলাই ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আলোচ্য ফটোকার্ড অনুযায়ী সার্চ করে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম নিউজ২৪ এর ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ফটোকার্ডটি পাওয়া যায়। ফটোকার্ডের সংবাদের লিংকটিও পাওয়া যায় কমেন্টে। গত ১৫ জুলাই প্রকাশিত লিংকটিতে খবরটির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা গেছেন হামলায় আহত হওয়া মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা ডিএল রাকিব। গত ৭ জুলাই পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলা হয় রাকিবের ওপর। এতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করলেও সেখানে আজ তার মৃত্যু হয়। খবরটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে পাওয়া দেশীয় গণমাধ্যম 'আমার সংবাদ'-এর অনলাইন সংস্করণে গত ১৫ জুলাই প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে রাকিব মোল্লা ও আলমগীর হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। ওই দ্বন্দ্বের জেরে রাকিব মোল্লা ও আলমগীর হোসেন শিবালয় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন। মাস খানেক আগে আলমগীর হোসেনের লোকজনকে মারধর করেন রাকিব মোল্লা। এরপর গত ৭ জুলাই সন্ধ্যায় স্থানীয় দশচিড়া খেলার মাঠে প্রতিপক্ষের লোকজন রাকিব মোল্লাকে কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যান। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ মানিকগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা রাকিব কোটা আন্দোলনকারীদের হামলায় নিহত হননি।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে ছাত্রলীগ নেতার ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হওয়ার খবরকে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হচ্ছে।