সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, শিশুটির নাম সিফাত। শিশুটির হার্টে ছিদ্র আছে উল্লেখ করে তার চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার আবেদন করা হচ্ছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ জুলাই 'Pricila Fatema Fan's Club' নামের একটি পাবলিক গ্রুপে 'হাফেজা মোছাঃ জান্নাতুল' নামের একটি আইডি থেকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ''শিশুটির চিকিৎসার জন্য আর চার লক্ষ টাকা প্রয়োজন। শিশুটির জন্ম থেকেই হার্ট ছিদ্র, টাকার প্রয়োজন। শিশুটির চিকিৎসার জন্য আর চার লক্ষ টাকা প্রয়োজন। শিশুটির জন্ম থেকেই হার্ট ছিদ্র, টাকার প্রয়োজন।'' এছাড়াও আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ এর হিসাব নম্বরও জুড়ে দেয়া হয়েছে পোস্টটিতে। স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টে যুক্ত করা ছবিগুলো দেখুন আলাদাভাবে---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় দেয়া তথ্য বিভ্রান্তিকর ও সাহায্যের আবেদন প্রতারণাপূর্ণ। ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে রোগাক্রান্ত বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয় বরং ছবিটি মুস্তফা নামে ভারতের এক অসুস্থ শিশুর।।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান Impactguru-র ওয়েবসাইটে ''Will Little Mustafa Return Home To Celebrate Eid?'' শিরোনামে একটি নিবন্ধে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া গেছে। এতে বলা হয়েছে, ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের অধিবাসী ছবির ওই শিশুর নাম মুস্তফা খান। শিশুটি কিডনি জটিলতায় ভুগছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
উপরের নিবন্ধ থেকে জানা যায়, শিশুটি Wockhardt Hospitals-এ ভর্তি আছে। শিশু মুস্তফার অসুস্থতার প্রমাণ হিসেবে একটি প্রেসক্রিপশনের ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটি দেখুন--
আরো সার্চ করে দেখা যায়, Impact Guru তাদের অফিসিয়াল ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গত ২৭ জুন ছবির শিশুটির জন্যে আর্থিক সাহায্যের অনুরোধ করে। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
পাশাপাশি, ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্মটি তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও মুস্তাফা নামের ওই শিশুর জন্যে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেছিল। ইউটিউব পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই আলোচ্য ছবিটি সিফাত নামে বাংলাদেশি কোন শিশুর নয় বরং ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের মুস্তফা খান নামের এক অসুস্থ শিশুর।
এছাড়া, বাংলাদেশের সিফাত দাবি করা ফেসবুক পোস্টগুলোতে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
সুতরাং ভারতীয় এক অসুস্থ শিশুর ছবি জুড়ে দিয়ে তাকে বাংলাদেশি দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।