সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি আফগানিস্তানের গ্রাফিতি-শিল্পী ও শিক্ষক শামসিয়া হাসানির। দেখুন এমন তিনটি পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর 'Shelley Hoque' নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, 'জ্ঞানই আলো…ছবিটি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা এবং আফগানিস্তানের সুপরিচিত গ্রাফিতি শিল্পী শামসিয়া হাসানির আঁকা। অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে বই হয়ে ওঠে আলো দানকারী মোমবাতি কিংবা জ্ঞানের মশাল'। অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, আপলোড করা ছবিটি আফগানিস্তানের শিল্পী শামসিয়া হাসানির। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টে ছবির বর্ণনাটি বিভ্রান্তিকর। রিভার্স ইমেজ সার্চিং টুল ব্যবহার করে প্রকৃত ছবিটি একাধিক ওয়েবসাইটে পাওয়া গেছে। তন্মধ্যে 'bestadsontv.com' নামের একটি ওয়েবসাইটে ছবিটির ব্যাপারে বলা হয়, চেক প্রজাতন্ত্রের বিজ্ঞাপনী সংস্থা 'ইয়াং অ্যান্ড রুবিকাম' (Y&R) ছবিটি 'রিপোর্টার' নামের একটি ম্যগাজিনের জন্য তৈরি করেছিল। দেখুন ছবিটি--
দেখুন এখানে।
আরো সার্চ করে ছবিটি 'clios.com' নামের একটি ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্যসহ পাওয়া গেছে। সেখানে ছবিটির ক্যাপশন লেখা হয়েছে, 'Questioning Radicalism'। সেখানে উল্লেখ করা হয়, আসল ছবিটি ২০১৮ সালে রিপোর্টার ম্যাগাজিন সিলিও অ্যাওয়ার্ডস-এ একটি ব্রোঞ্জ পদকও পেয়েছিল। দেখুন--
দৃশ্যত প্রকৃত ছবিটিকে কেঁটে ছোট করে এবং এতে নারীর হাতে ধরে রাখা ম্যাগাজিনের কভারটি পরিবর্তন করে লাল রং দিয়ে ভাইরাল ছবিটি তৈরি করা হয়েছে। প্রকৃত ছবিটি ও ভাইরাল ছবিটি পাশাপাশি দেখুন--
এদিকে,'ইয়াং অ্যান্ড রুবিকাম' এর তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক টমাসভোরাক বুম লাইভকে ছবিটি তাঁদের তৈরি করা বলে জানিয়েছেন। এছাড়া তাঁরা ছবিটিতে কোনও প্রকার পরিবর্তনের অনুমতি দেননি বলেও জানান তিনি। দেখুন বুম লাইভের রিপোর্টটি এখানে।
অর্থাৎ একাধিক উৎস থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ছবিটি চেক রিপাবলিকের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ছবি। আফগানিস্তানের কোনো শিল্পীর নয়।
অপরদিকে আফগানিস্তানের গ্রাফিতি শিল্পী শামসিয়া হাসানিও নিজের টুইটারে জানিয়েছেন উল্লেখিত ছবিটি তাঁর আঁকা নয়। তিনি বলেন, "সম্প্রতি আমি লক্ষ্য করছি, সামাজিক মাধ্যমে অনেকে এটি আমার ছবি হিসাবে শেয়ার করেছেন। কিন্তু এটি আমার চিত্রকর্ম নয়। আমি বুঝতে পারছি যে, তাঁরা আমাকে এবং আমার শিল্পকে সমর্থন জানাতেই চাইছেন। কিন্তু এই ছবিটির আসল শিল্পী এই কৃতিত্বের অধিকারী এবং নিশ্চিত করুন যেন তাঁর কাছেই তা পৌঁছায়।" দেখুন তার টুইটটি--
Recently I noticed that hundreds of social media users shared this image as my artwork on their profiles/ pages, but this is not my artwork.
— Shamsia Hassani (@ShamsiaHassani) September 13, 2021
I know that they wanted to support me and my art but please make sure to give the credit to the real artist. pic.twitter.com/MGRf5776cB
অর্থাৎ চেক রিপাবলিকের একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার ছবিকে আফগানিস্তানের গ্রাফিতি শিল্পীর ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।