সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি থেকে একটি কাফনে মোড়ানো শরীরের ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছবিটি জেরুজালেমে মসজিদুল আল-আকসায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় নিহত এক ব্যক্তির, যার চেহারা হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছে। এরকম দুটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১১ এপ্রিল 'Mominul Parbez' নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, "May Allah bless him jannat-ul-firdous💖🤲 May Allah bless him with heaven❤️🤲 মসজিদ আল আকসা মসজিদকে বিস্ফোরণ ও হামলা থেকে রক্ষা করতে গিয়ে মারা গেলেন, মুসলমানরা তাকে শহীদ বলে সম্মানিত করেছেন, তার হাসি দেখুন..মাশাল্লাহ"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে মুসলিম সংস্কৃতি অনুযায়ী মরদেহের গোসল ও কাফন'সহ সার্বিক সৎকারের নিয়ম শেখানোর একটি ক্যাম্পেইন থেকে নেওয়া।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর প্রকাশিত একটি ব্লগস্পটে "ACTIVITIES IN KPTM" শিরোনামে "REHLAH AL-KHULUD PROGRAMS" শীর্ষক একটি লেখায় আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ব্লগস্পট থেকে জানা যায়, ব্লগটির লেখক মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে কেপিটিএমের উদ্যোগে সংগঠিত রেহলা আল-খুলুদ নামক একটি ক্যাম্পেইনে যোগদান করেন। ওই অনুষ্ঠানে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মৃতদেহকে সৎকার করা তথা গোসল করানো, কাফন পরানো ইত্যাদি শেখানো হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে, কেপিটিএমের ব্যাপারে জানতে সার্চ করে জানা যায়, কেপিটিএম বা Kolej Poly-Tech MARA মালয়েশিয়ায় ব্যক্তি উদ্যোগে তৈরি একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০০৩ সালে আত্মপ্রকাশ করার পরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি একটি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়সহ মোট ৭ টি শাখার মাধ্যমে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
অর্থ্যাৎ কেপিটিএম নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মৃতদেহকে দাফন-কাফনের নিয়ম শেখানোর একটি ক্যাম্পেইন পরিচালনা করে যেখানে মুসলিমদের মৃতদেহের সৎকারের নিয়মাবলী শেখানো হয়। আলোচ্য ছবিটি ওই ক্যাম্পেইন চলাকালে ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, ছবিটি আল আকসায় নিহত ব্যক্তির হাস্যোজ্জল চেহারার দাবিতে ভারতে ছড়িয়ে পড়লে ইন্ডিয়া টুডে ও নিউজ মোবাইল সহ অনেক ফ্যাক্ট চেক সংস্থা খবরটি যাচাই করে তা বিভ্রান্তিকর হিসেবে চিহ্নিত করে।
সুতরাং মৃতদেহের সৎকার শেখানোর সময়ে ধারণ করা প্রতীকী মৃতদেহের ছবিকে আল-আকসা মসজিদে হামলায় নিহত ব্যক্তির হাস্যোজ্জল ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।