সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বেশ কিছু ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, এগুলো সাম্প্রতিক ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ছবি। দেখুন এমন দুটি পোস্ট এখানে এবং এখানে।
গত ২৯ অক্টোবর 'আসমানী আলো' নামের ফেসবুক গ্রুপ থেকে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করে দাবি করা হয়, ত্রিপুরায় মুসলিমদের উপর নির্যাতন চলছে। মসজিদসহ ঘরবাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে। পোস্টের সাথে যুক্ত ছবিগুলোর মধ্যে প্রথম ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, দাঁড়িয়ে থাকা দু'জন ব্যক্তির হাতে অনেকগুলো পুড়ে যাওয়া ধর্মীয় গ্রন্থ। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের সাথে যুক্ত প্রথম ছবিটি ত্রিপুরায় চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সাথে সম্পর্কিত নয়। এটি মূলত ২০২১ সালে ভারতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ছবি। প্রথমত, কিওয়ার্ড সার্চ করে ছবিটি টুইটারে একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক আসিফ মুজতবার থ্রেডে পাওয়া গেছে। সেই থ্রেডে একাধিক ছবি আপলোড করে তিনি দাবি করেন, ছবিগুলো নয়াদিল্লির কাঞ্চন কুঞ্জ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগুন লাগার ছবি, ত্রিপুরার ঘটনার নয়। দেখুন সেই টুইটার পোস্টটি--
এছাড়া আসিফ মুজতবার ইন্সটাগ্রাম আইডিতেও এই একই ছবি চলতি বছরের ১৩ জুন পোস্ট করতে দেখা গেছে। সেখানেও তিনি দাবি করেন ছবিগুলো নয়াদিল্লির কাঞ্চন কুঞ্জ শরণার্থী শিবিরের ছবি। দেখুন সেই ইন্সটাগ্রাম পোস্ট এখানে--
ইন্সটাগ্রাম পোস্টটি দেখুন এখানে।
তবে ছবিগুলো কে কখন তুলেছে সে সম্পর্কে কিছুই সেই পোস্টগুলোতে উল্লেখ করা হয়নি।
পরবর্তীতে বুম লাইভ এর পক্ষ থেকে আসিফ মুজতবার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ছবিটি একজন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারের তোলা যার নাম মোহাম্মদ মেহেরবান। এছাড়া তিনি আরো জানান, ছবিতে ভস্মীভূত ধর্মীয় গ্রন্থ হাতে দুটি লোককে দেখা যাচ্ছে, তারা মূলত ভারতে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী। দেখুন বুম লাইভের সেই প্রতিবেদন এখানে।
উল্লেখ্য বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় গত মঙ্গলবার থেকে চলমান মুসলিম বিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মসজিদ এবং বাড়িঘর। দেখুন 'দ্য ওয়্যার'-এ প্রকাশিত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন এখানে--
প্রতিবেদননটি পড়ুন এখানে।
অর্থাৎ গত জুন মাসে ভারতের নয়াদিল্লিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগার ছবিকে ত্রিপুরার সহিংসতার খবরের সাথে মিলিয়ে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।