HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

মৃত ভাইকে বহনকারী জাপানি শিশুর সাথে জুড়ে দেয়া গল্পটি ভিত্তিহীন

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, জাপান থেকে এক আমেরিকান আলোকচিত্রী ছবিটি তুললেও সৈনিকের সাথে শিশুর কথোপকথনের গল্পটি সত্য নয়।

By - Ummay Ammara Eva | 24 May 2023 11:32 AM IST

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও গ্রুপে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছবিতে দৃশ্যমান জাপানের এই শিশুটি তার মৃত ভাইকে কবর দিতে পিঠে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। এক সৈনিক তাকে লক্ষ্য করে মৃত শিশুটিকে বোঝা বলে তাকে ফেলে দিতে বলে যাতে সে ক্লান্ত না হয়। ছেলেটি তখন জবাব দেয়, "সে বোঝা নয়, সে আমার ভাই!" এরকম দাবির কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানেএখানে

গত ২০ মে 'Amjad Hossain' নামে একটি আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের এই ছেলেটি তার মৃত ভাইকে কবর দিতে পিঠে বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। একজন সৈন্য তাকে লক্ষ্য করে এবং মৃত শিশুটিকে বোঝা বলে তাকে ফেলে দিতে বলে যাতে সে ক্লান্ত না হয়। ছেলেটি তখন জবাব দেয়, "সে বোঝা নয়, সে আমার ভাই!" সৈনিকটি বুঝতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। সেই থেকে এই ছবিটি জাপানে ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠে। এটি তাদের নীতিবাক্য হয়ে যায়- "সে বোঝা নয়, সে আমার ভাই/সে আমার বোন।" (“He’s not a burden, he’s my brother/sister"). যদি সে পড়ে যায়, তাকে উঠান। ক্লান্ত হলে তাকে সাহায্য করুন। যদি তার সামর্থ্য দুর্বল হয়, পাশে দাঁড়ান। আর যদি সে ভুল করে থাকে, তাহলে তাকে ক্ষমা করে দিন। পৃথিবী যদি তাকে পরিত্যাগ করে তবে তাকে আপনার পিঠে নিন, কারণ সে বোঝা নয়, সে আপনার ভাই/বোন!©"। স্ক্রিনশট দেখুন--


ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সত্য নয়। জো ও'ডোনেল নামে আমেরিকান এক আলোকচিত্রী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি শিশুর বিখ্যাত এই ছবিটি তুললেও সৈনিকের সাথে শিশুটির কথোপকথনের ব্যাপারটি সত্য নয়।

কি-ওয়ার্ড সার্চ করে লাস ভেগাস রিভিউ জার্নালে ২০০৭ সালের ৬ আগস্ট  'DAD’S IMAGES OF DEATH' শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই নিবন্ধে টিগ ও'ডোনেল নামের এক ব্যক্তি তাঁর পিতা জো ও'ডোনেলের তোলা এই ছবিটিসহ মোট ৪টি ছবি নিয়ে বাবার স্মৃতিচারণ করেছেন। নিবন্ধটি থেকে আরো জানা যায়, জো ও'ডোনেল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান, আইজেনহাওয়ার, জন এফ কেনেডি, জনসন ও নিক্সনের সময়ে হোয়াইট হাউজের আলোকচিত্রী ছিলেন এবং হোয়াইট হাউজের নির্দেশে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা হামলা পরবর্তী জাপানের দৃশ্যধারণ করেছেন। নিবন্ধটি প্রকাশের ৩ দিন পর অর্থ্যাৎ ২০০৭ সালের ৯ আগস্ট জো ও'ডোনেল মৃত্যুবরণ করেন। স্ক্রিনশট দেখুন--


এছাড়াও, ফাইভ কলেজ কনসোর্টিয়াম নামে একটি হায়ার এডুকেশন গ্রুপের ওয়েবসাইটে 'Japan 1945-A U.S. Marine's Photographs from Ground Zero, by Joe O'Donnell' শিরোনামের একটি নিবন্ধে জাপানের বিশ্বযুদ্ধকালীন কিছু ছবির সংগ্রহের ভিতরে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--


আরো সার্চ করে ঐতিহাসিক ও দুর্লভ ছবির সংগ্রহ ও সংরক্ষণকারী ওয়েবসাইট 'Rare Historical Photos' এ 'A Japanese boy standing at attention after having brought his dead younger brother to a cremation pyre, 1945' শিরোনামে একটি নিবন্ধে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--


একই নিবন্ধে জো ও'ডোনেলের একটি সাক্ষাৎকার খুঁজে পাওয়া যায়, যা তিনি এক জাপানি সাক্ষাতকারদাতাকে দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি এই ছবিটি সম্পর্কে বলেন,

"আমি প্রায় দশ বছর বয়সী একটি ছেলেকে পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে দেখেলাম। সে তার পিঠে একটি শিশুকে নিয়ে যাচ্ছিল। জাপানে সেই দিনগুলিতে, আমরা প্রায়ই বাচ্চাদের তাদের ছোট ভাই বা বোনের সাথে তাদের পিঠে খেলতে দেখতাম, কিন্তু এই ছেলেটি স্পষ্টতই আলাদা ছিল। বোজাই যাচ্ছিল যে সে এই জায়গায় এসেছিল কোনো গুরুতর কারণে। তার পায়ে জুতা ছিল না। তার মুখ ছিলো শক্ত ছিল। ছোট্ট মাথাটা পিছন দিকে হেলানো ছিল যেন শিশুটি গভীরভাবে ঘুমিয়ে আছে। ছেলেটি সেখানে পাঁচ-দশ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল"।

"সাদা মাস্ক পরা লোকেরা তার কাছে গেল এবং নিঃশব্দে শিশুটিকে ধরে রাখা দড়িটি খুলে ফেলতে শুরু করল। তখনই আমি দেখলাম যে শিশুটি ইতিমধ্যেই মারা গেছে। লোকেরা হাত-পা ধরে লাশটিকে আগুনের উপর রাখল। ছেলেটি নড়াচড়া না করে সেখানে দাঁড়িয়ে আগুনের শিখা দেখছিল। সে তার নীচের ঠোঁটকে এত জোরে কামড়ে ধরে রেখেছিলো যে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিলো। শিখাটি সূর্যের অস্ত যাওয়ার মতো নিচু হয়ে জ্বলছে। ছেলেটি ঘুরে দাঁড়িয়ে চুপচাপ দূরে চলে গেল।"

তবে, সাক্ষাৎকারটিতে কোনো সৈনিকের সাথে শিশুটির কথোপকথনের ব্যাপারে বলা হয়নি বরং তার নীরবতার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। নিবন্ধটি থেকে নেয়া জো ও'ডোনেলের বক্তব্যের স্ক্রিনশট দেখুন--


এছাড়া একই দাবিতে ছবিটি ভারতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ফ্যাক্ট চেক সংস্থা ফ্যাক্টলি তথ্যটি যাচাই করে সৈনিকের সাথে জাপানি শিশুটির কথোপকথনের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে চিহ্নিত করে।

সুতরাং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তোলা মৃত ছোট ভাইয়ের লাশ বহনকারী এক জাপানি শিশুর ছবির সাথে ভিত্তিহীন গল্প প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।

Tags:

Related Stories