HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
HomeNo Image is Available
AuthorsNo Image is Available
Contact UsNo Image is Available
Correction PolicyNo Image is Available

Languages & Countries :






More about them

ফেক নিউজNo Image is Available
ফ্যাক্ট ফাইলNo Image is Available
শরীর স্বাস্থ্যNo Image is Available
ফেক নিউজ

ইয়েমেনের আল হুতাইব গ্রামে কখনো বৃষ্টি হয়না শীর্ষক দাবিটি সত্য নয়

বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয় রবং ইয়েমেনের আল হুতাইব গ্রামে স্বাভাবিকভাবেই বৃৃষ্টি হয়।

By - Tausif Akbar | 1 March 2024 9:43 AM IST

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক অ্যাকাউন্ট, পেজ এবং গ্রুপে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ইয়েমেনের আল হুতাইব গ্রামে কখনো বৃষ্টি হয়নি। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে

গত ৯ জানুয়ারি 'Nazmun Nahar Rafi' নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে "যেখানে কোনদিন বৃষ্টি হয়নি যায়গাটির নাম আল হুতাইব। তবে মজার ব‍্যাপার হলো এখানে সাধারন গ্রামের মতো সবকিছু আছে যেমন বাড়ি ঘর, স্কুল, মাদ্রাসা গাছপালা ইত‍্যাদি। ইয়েমেনের রাজধানী সানার প্রশাসনিক এলাকা জাবল হারজের পার্বত‍্য অঞ্চলে গ্রামটি অবস্থিত। এখানে বৃষ্টি না হওয়ার কারন এটি মাটি থেকে প্রায় ৩২০০ ফিট উঁচুতে। এই উচ্চতাই এখানে বৃষ্টি না হওয়ার কারন। সাধারন বৃষ্টির মেঘ জমে সমতল থেকে ২০০০ মিটার উঁচুতে। তথ্য: গুগল" ক্যাপশনে একটি পোস্ট করা হয়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--



ফ্যাক্ট চেক:

বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ইয়েমেনের আল হুতাইব গ্রামে স্বাভাবিকভাবেই বৃষ্টি হয়। এছাড়াও ভূ-পৃষ্ঠের ২,০০০ মিটার উচ্চতায় বৃষ্টিপাত হতে পারে না শীর্ষক তথ্যটিও সত্য নয়। মূলত বায়ুমন্ডলে বিদ্যমান কয়েক ধরনের মেঘের মধ্যে কিউমুলাস (কিউমুলোনিমবাস) মেঘ ১২,০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে, তাই ৩,২০০ মিটার উচ্চতায় তথা আল হুতাইব গ্রামেও বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

Al Hutaib, Hutaib, rain, rained সহ বিভিন্ন শব্দ ব্যবহার করে কি-ওয়ার্ড রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা 'দ্য ডন'-এ ২০১৫ সালের ১৯ জুন "On the brutally beautiful streets of Yemen" শিরোনামে প্রকাশিত গ্রামটিতে ভ্রমণ বিষয়ক একটি নিবন্ধ খুঁজে পাওয়া যায়।

এতে উল্লেখ করা হয়, 'ইয়েমেনের হুতাইব যেন স্বর্গের একটি শহরের মতো ছিল। এখানে পাহাড়গুলো বিভিন্ন স্থাপনা ও মসজিদকে আবৃত করে রেখেছে। বাগানগুলো এতই জমকালো ছিল যেন মনে হতো সরাসরি স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপ লাভ করেছে। আল হুতাইব গ্রামে প্রতিদিনই বৃষ্টি হতো' (অনূদিত ও সংক্ষেপিত)। স্ক্রিনশট দেখুন–




'দ্য ডন' এর এই নিবন্ধ অনুযায়ী সেখানে প্রতিদিনই বৃষ্টি হওয়ার কথা জানা গেছে অথচ প্রচার করা হচ্ছে 'এই গ্রামে কখনোই বৃষ্টি হয়নি'। এখানে আলোচ্য দাবি এবং এ বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্য কাছাকাছি নয় বরং পুরোপুরি বিপরীত। এই বৈপরীত্যের ফলে এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য 'পৃথিবীর সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত' কিংবা 'পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্কতম' এলাকাগুলোর তালিকা সার্চ করা হয়।

'পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থান' নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা ম্যাগাজিন ফোর্বস এর নিবন্ধ, ডকুমেন্টারি চ্যানেল ডিসকোভারি'র তালিকা, যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা'র তথ্য, বিজ্ঞান বিষয়ক সাইট লাইভ সায়েন্স এর তালিকা সহ ইন্টারনেটের বিজ্ঞানভিত্তিক গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে এ ক্ষেত্রে ইয়েমেনের আল হুতাইব শহরের নাম পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ আল হুতাইবে বৃষ্টি নিয়ে 'দ্য ডন' এর নিবন্ধের লেখাটি নির্ভরযোগ্য।


আল হুতাইবে বৃষ্টি কিংবা বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে আবহাওয়া বিষয়ক সাইটগুলোর তথ্য যা বলছে

বিশ্বব্যাপী আবহাওয়া নিয়ে কাজ করা সাইট 'ওয়েদার এটলাস' থেকে দেখা যায় যে বছরের শুরুতে তথা জানুয়ারি মাসে ৬ দিনের বেশি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ৮ দিনেরও বেশি বৃষ্টি হয় আল হুতাইবে। পাশাপাশি সাইটটিতে বিভিন্ন মাসের বৃষ্টিপাতের তথ্য সমৃদ্ধ চার্ট থেকে দেখা যায় "আল হুতাইবে সর্বোচ্চ; ১১১ মি.মি বৃষ্টিপাত হয় আগস্টে এবং সবচেয়ে কম; ৫ মি.মি বৃষ্টিপাত হয় অক্টোবর এবং ডিসেম্বরে"। এছাড়াও সাইটটির পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ৮ মার্চ বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফেব্রুয়ারির বৃষ্টিপাত, বজ্রপাতের পূর্বাভাস ও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির চার্ট এর কোলাজ দেখুন--



আরেক আবহাওয়া বিষয়ক সাইট 'Accu Weather' এর ক্ষেত্রেও আল হুতাইবে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেখতে পাওয়া যায়। অর্থাৎ ইয়েমেনের আল হুতাইব নামের গ্রামটিতে বৃষ্টি হয়েছে এবং স্বাভাবিক নিয়মেই বৃষ্টি হয়।

এদিকে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টগুলোতে বলা হচ্ছে, আল হুতাইব গ্রামটি মাটি থেকে ৩২০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। এই উচ্চতার ফলে সেখানে বৃষ্টি হয় না। কারণ সাধারন বৃষ্টির মেঘ জমে সমতল থেকে ২০০০ মিটার উঁচুতে। পোস্টগুলোতে মিটার এবং ফুটের মধ্যেও তথ্য গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। সংবাদ মাধ্যম আল আরাবিয়ার তথ্য অনুযায়ী আল হুতাইব গ্রামটি ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ৩২০০ ফুট নয় বরং ৩২০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত।


ভূ-পৃষ্ঠের ৩,২০০ মিটার উঁচুতে কি বৃষ্টি হয়?

এ বিষয়ে সার্চ করে আমেরিকান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক 'ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক' এর তথ্য অনুযায়ী কিউমুলাস মেঘ বড় এবং এই মেঘ উলম্বভাবে (লম্বা) বায়ুমণ্ডলে ১২,০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। কিউমুলাস মেঘ উষ্ণ, আর্দ্র বাতাস এর মাধ্যমে তৈরি হয়। ভারী বৃষ্টিপাতের বেশিরভাগ কিউমুলাস মেঘ থেকে হয়। এই যে আবহাওয়া নিয়ে আসে তা তাদের উচ্চতা এবং আকারের উপর নির্ভর করে। মেঘের ভিত্তি যত উপরে হবে বায়ুমণ্ডল তত শুষ্ক হবে এবং আবহাওয়া তত সুন্দর হবে। মাটির কাছাকাছি অবস্থিত মেঘ এর অর্থ হলো ভারী তুষার বা বৃষ্টি। 

মেঘের স্তর ও তার সাথে সমন্বয় করে আল হুতাইব গ্রামটির অবস্থান সহ কিভাবে গ্রামটিতে মেঘ হতে বৃষ্টি হওয়া সম্ভব সে বিষয়ের উপর তৈরি একটি চিত্র দেখুন--



অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠের ২০০০ মিটার উচ্চতায় বৃষ্টি হয়। যেহেতু কিউমুলাস (কিউমুলোনিমবাস) মেঘ ১২,০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে, সেহেতু ৩,২০০ মিটার উচ্চতায় তথা আল হুতাইব গ্রামেও বৃষ্টি হওয়া স্বাভাবিক।

সুতরাং গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে আল হুতাইব গ্রামে কখনো বৃষ্টি হয়নি মর্মে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।

Tags:

Related Stories