সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একটি খবর শেয়ার করে বলা হচ্ছে, এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে ১০ তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। খবরটির সাথে একটি ছবিও জুড়ে দেয়া হয়েছে। দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২১ আগস্ট 'সময় নিউজ টিভি' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে একটি খবর পোস্ট করে বলা হয়, 'পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে পুঁতে রাখা ১০ তরুণীর লাশ উদ্ধার!'। হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত খবরটিতে কোনো স্থানের নাম উল্লেখ না থাকলেও একটি ছবি যুক্ত করা হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, হেলমেট পরা একাধিক ব্যক্তিকে বাংলাদেশ পুলিশের কিছু সদস্য ঘিরে রেখেছে। এছাড়া ইনসেটে এক ব্যক্তির ছবিও দেখা যাচ্ছে। দেখুন ছবিসহ সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
খবরটির আর্কাইভ দেখুন এখানে।
কোথাও কোথাও ঘটনাটি সিলেটের বলে দাবি করা হয়েছে এবং একটু ভিন্ন শিরোনামে প্রকাশিত একই রকম খবরের সাথে যুক্ত ছবিতে বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিফর্ম পরা কিছু ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে। দেখুন স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্টচেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিন্ন শিরোনামে একই রকম খবরের সাথে যুক্ত করা দুটি ছবিই বিভ্রান্তিকর।
মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরের একটি ঘটনার সাথে বাংলাদেশ পুলিশের ছবি জুড়ে দেয়া হয়েছে। আলোচ্য খবরটিতে আল জাজিরার বরাত দিয়ে বলা হয়, এল সালভাদরে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে পুঁতে রাখা ১০ নারী ও শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে, দেশটির পুলিশ। সেখানে আরো বলা হয়, ৫১ বছর বয়সি হুগো ওসোরিও চাভেজ ওসোরিও নামে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও ১৩টি খুনের মামলার তদন্ত চলছে। কিন্তু খবরটিতে ব্যবহৃত ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, একাধিক হেলমেট পরা একাধিক ব্যক্তিসহ বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিফর্মের কিছু সদস্যকে। এছাড়া আরেকটি খবরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একটি গর্তকে সামনে রেখে কিছু উৎসুক মানুষ ও বাংলাদেশ পুলিশের কিছু সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন।
এছাড়া রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে, ফেনীতে এক ব্যবসায়ীর স্বর্ণের বার লুট করার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত ডিবি কর্মকর্তাদের ছবি এটি। অর্থাৎ এটি এল সালভাদরের কোনো ঘটনার নয়। গত ১১ আগস্ট 'স্বর্ণের বার লুটের মামলায় ডিবির ছয় কর্মকর্তা রিমান্ডে' শিরোনামে এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করে এনটিভি। দেখুন স্ক্রিনশট--
এছাড়া একই ছবি বাংলাদেশি সংবাদ সংস্থা ইউএনবিতেও প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন এখানে।
উল্লেখ্য, এল সালভাদরে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে লাশ পাওয়ার ঘটনাটি গণমাধ্যমে এসেছিল গত মে মাসে। আল জাজিরায় 'Ten bodies found on former El Salvador police officer's property' শিরোনামে খবরটি প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ১৫ মে। এছাড়া বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে এই খবরটি অভিযুক্তের ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন দৈনিক যুগান্তরে 'এল সালভাদরে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ি থেকে পুঁতে রাখা ১০ লাশ উদ্ধার' শিরোনামে ১৬ মে প্রকাশিত খবরটির স্ক্রিনশট-
এছাড়া, সিলেটের দাবি করা একই রকম খবরে প্রকাশিত ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে, ছবিটি নরসিংদির ভিন্ন এক ঘটনার। চলতি বছরের ৯ ও ১০ মার্চ এই ছবিটি সহ একাধিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। গত ৯ মার্চ ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত খবরটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া গত ১০ মার্চ ডেইলি বাংলাদেশ-এ প্রকাশিত খবরটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ এল সালভাদরের এক সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার ঘটনার সাথে বাংলাদেশের পুলিশের ভিন্ন ভিন্ন ছবি যুক্ত করে খবরে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।