সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে পাঠ্যবইয়ের এমন একটি পৃষ্ঠার ছবি শেয়ার করা হচ্ছে যেখানে ভ্রুন বিজ্ঞান সম্পর্কে তথ্য রয়েছে। ছবিটিতে লিঙ্গ নির্ধারণ প্রক্রিয়া বোঝাতে যে ছবি দেয়া হয়েছে সেখানে নারী ক্রোমোজোম ভুল ভাবে উপস্থাপন করতে দেখা যায়। XX হল নারী ক্রোমোজোম এবং XY হল পুরুষ ক্রোমোজোম। এই ক্রোমোজোমগুলো আমাদের জিন ধারণ করে থাকে। ফেসবুক পোস্টের ছবিতে নারী ক্রোমোজোমকে বোঝাতে XX এর স্থলে XY লেখা দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি "Dr-Ferdous Hossain" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, "মেডিকেল সাইন্স বনাম আমাদের বাংলাদেশের পাঠ্যবই"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত নবম ও দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইয়ে ছবিটি খুঁজে পাওয়া গেছে এবং সেখানে লিঙ্গ নির্ধারণ প্রক্রিয়া ছবির মাধ্যমে সঠিকভাবেই তুলে ধরা হয়েছে। মূলত ফেসবুক পোস্টের ছবিগুলোই বিকৃত করা।
সার্চ করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) ওয়েবসাইটে নবম দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইয়ের সফটকপি খুঁজে বের করা হয় যাচাইয়ের জন্য। বইয়ের ২৬৬ পৃষ্ঠায় আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। বিশ্লেষণ করার পর নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত নবম ও দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইয়ে নারী ক্রোমোজোমকে সঠিকভাবেই চিত্রায়িত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, XX হল নারী ক্রোমোজোম এবং XY হল পুরুষ ক্রোমোজোম। ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রকাশিত ছবিটি (বামে) এবং এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত নবম দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইয়ের (ডানে) ছবির পাশাপাশি স্ক্রিনশট দেখুন--
আরও নিশ্চিত হওয়ার জন্য বুম বাংলাদেশ দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ২০২২ সাল এবং ২০২৩ সালে শিক্ষার্থীদের জন্য এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত নবম দশম শ্রেণীর ৫ টি জীববিজ্ঞান বই নির্বাচন করে যাচাই করেছে। সবগুলো বইয়েই সংশ্লিষ্ট অধ্যায়ে নারী ক্রোমোজোমের প্রতীককে সঠিকভাবেই চিত্রায়িত করা হয়েছে। এরকম তিনটি ছবি নিম্নে তুলে ধরা হল--
অর্থাৎ ফেসবুক পোস্টগুলোতে পাঠ্যবইয়ের ছবিটি বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। মূল বইয়ে সঠিকভাবেই তথ্য দেয়া হয়েছে।
সুতরাং নবম ও দশম শ্রেণীর জীববিজ্ঞান বইয়ের ছবিকে সম্পাদনার মাধ্যমে বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যেখানে মূল বইয়ে সঠিকভাবেই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।