ধর্ষণ শেষে তরুণীকে চলন্ত ট্রেনের নিচে রেখে যাওয়ার ভিডিওটি স্ক্রিপ্টেড
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি দৃশ্য, বাস্তব কোনো ঘটনার নয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে করা হয়েছে। ভিডিওতে রেললাইনে মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় একজন নারীর মরদেহ সদৃশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভিডিওটি প্রচার করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে জামাত-শিবির কর্মীরা ধর্ষণ শেষে তরুণীকে রেললাইনে ফেলে গেছে, পরে ট্রেন আসায় নারীর মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৯ মার্চ ‘মোঃ শান্ত মিয়া’ নামক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “জামাত ছাত্রশিবির কর্মীরা ধর্ষণ শেষে তরুণীকে চলন্ত ট্রেনের নিচে রেখে গেছে সারা বাংলাদেশে চলছে শিশু থেকে বৃদ্ধ ও মধ্য বয়সের তরুণীদেরও নেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা ,,, দেশটা আগের থেকে অনেক খারাপ হয়ে গেছে 🥲”। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি দৃশ্য, বাস্তব কোনো ঘটনার নয়। ইউটিউবে একটি ভারতীয় চ্যানেলে বিনোদনের জন্য ভিডিওটি স্ক্রিপ্ট মেনে অভিনয় ও বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহযোগীতায় তৈরি করা হয়েছে।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে ছবি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ইউটিউবে ‘JS HAUNTED VLOGS’ নামক একটি চ্যানেলে গত ৯ মার্চ প্রকাশিত আলোচ্য ভিডিওটি (রিলস ভিডিও) পাওয়া যায়। তবে ভিডিওর সাথে সরাসরি কোনো তথ্য প্রদান করা হয়নি। ভিডিওটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে চ্যানেলটিতে প্রবেশ করে দেখা যায়, চ্যানেলটির বিস্তারিত অংশে তারা নিজেদেরকে একটি বিনোদনমূলক চ্যানেল হিসেবে উল্লেখ করেছে, এছাড়াও তাদের চ্যানেলে আলোচ্য ভিডিওটির কয়েকটি পর্ব সহ মাথাবিহীন স্ক্রিপ্টেড দৃশ্যের সমজাতীয় বেশকিছু ভিডিও পাওয়া যায়। দেখুন--
এমনকি একটি ভিডিওতে মাথাবিহীন অবস্থায় উঠে দাঁড়াতেও দেখা যায়। এগুলো থেকে প্রতীয়মান হয় যে ভিডিওগুলো স্ক্রিপ্ট মেনে অভিনয় ও বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সহযোগীতায় তৈরি করা হয়েছে।
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি বিনোদনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি দৃশ্য, বাস্তব কোনো ঘটনার নয়।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে স্ক্রিপ্টেড ভিডিও ব্যবহার করে "জামাত-শিবির কর্মীরা ধর্ষণ শেষে তরুণীকে চলন্ত ট্রেনের নিচে রেখে গেছে" বলে প্রচার করা হয়েছে; যা বিভ্রান্তিকর।