রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের ভিডিও সিলেটের বন্যার দাবিতে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভিডিওটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের সময় ধারণ করা, সিলেটের চলমান বন্যার নয়।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে জলবদ্ধ মানুষদের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতির সময় ধারণ করা। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৯ মে 'Mujibur Rahman' নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "সিলেটে ধনী-গরিব সবার ঘরেই এখন বন্যার পানি। পার্থক্য হলো গরিবরা বড় অসহায়!"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের, সিলেটে সাম্প্রতিক বন্যার সাথে এর সম্পর্ক নেই।
ভিডিওটি থেকে কী-ফ্রেম কেটে সার্চ করার পর, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার তুর্কি সংস্করণ Amerikaninsesi.com-এ ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর "Myanmar'dan Kaçan Arakanlı Müslümanlar'ın Zor Yolculuğu ( স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ- The Difficult Journey of Rohingya Muslims Fleeing from Myanmar) " শিরোনামের একটি প্রতিবেদনে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়।
ভিডিওতে দেখতে পাওয়া একই ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্করণে তার পরদিন অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর "Turkish Envoy Visits Bangladesh to Help Rohingya Refugees from Myanmar" শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদনে। এই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তৎকালে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোগলু সহ তুরস্কের একটি প্রতিনিধিদল বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
একই ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া গেছে ভয়েস অব আমেরিকার মূল ইউটিউব চ্যানেলেও, যা ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আপলোড করা হয়েছে।
ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া স্ক্রিনশট এবং বিভ্রান্তিকর দাবির ফেসবুক ভিডিওর স্ক্রিনশটের পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যার নয় বরং ২০১৭ সালের রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের।
প্রসঙ্গত, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গত কয়েকদিন ধরে সিলেটে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন নদ-নদীর পানি উপচে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে সিলেটের প্রায় সব উপজেলাতে বন্যা দেখা দিয়েছে।
সুতরাং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের পুরোনো ভিডিওকে সিলেটের সাম্প্রতিক বন্যার দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।