প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভিডিওটি দুবাইয়ের নয় বরং ইয়েমেনের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০১৭ সালে ইয়েমেনে ধর্ষণের অভিযোগে প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ভিডিও এটি।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, দুবাইয়ে ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ১৫ মিনিটের ভিতরে বিচার করে ধর্ষকের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১১ মার্চ 'Sk Kamal' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "দুবাইতে ৫ বছরের এক শিশুকে ধ'র্ষণ করা হয়েছিলো... এই ধ'র্ষণের ঘটনার ১৫ মিনিটের মধ্যেই বিচার বিভাগ পুলিশকে,-ধ'র্ষককে জনসমক্ষে গু*লি করার নির্দেশ দেয়! বাংলাদেশের অপ'রাধীদের সাথে এটাই করা উচিত। #realestate #follow #ad #fypシ゚viralシfypシ゚viralシalシ"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, ২০১৭ সালে ইয়েমেনের হুসেন আল সাকেত নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। পরে, ওই ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার সময় এই ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে SETN নামে চীনভিত্তিক একটি অনলাইন পোর্টালে ২০১৮ সালের ৫ জানুয়ারি "Sex offender shot 5 times in a row, "struggled and was pulled back", video of hanging his body for public display goes viral!" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনটিতে আলোচ্য ভিডিওটির মত দেখতে একটি কি-ফ্রেম খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২২ বছর বয়সী হুসেন আল সাকেত নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৫ বছর বয়সী একটি শিশুকে যৌন নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। সেসময়ে সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনা সাড়া ফেলেছিল। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার ওয়েবসাইটে ২০১৭ সালের ১৪ আগস্ট ''Photos show moments before Yemeni executed for child rape and murder'' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির সূত্রে পাওয়া আলোচ্য ভিডিওর দৃশ্যে দেখানো দৃশ্যের মত একাধিক ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ইয়েমেনিরা হুথি-নিয়ন্ত্রিত রাজধানীতে জড়ো হয়েছিল চার বছর বয়সী এক মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ২২ বছর বয়সী হুসেন আল-সাকেতের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখার জন্য। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও মিডল ইস্ট মনিটর, দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়টার্স এবং নিউইয়র্ক টাইমসের বরাতে একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি দুবাইয়ে কোনো ধর্ষককে প্রকাশ্যে শাস্তি প্রদানের নয় বরং এটি ইয়েমেনে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ভিডিও।
সুতরাং ইয়েমেনে এক ব্যক্তির প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ভিডিওকে দুবাইয়ের বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।