ভারতের মন্দিরে ভূত তাড়ানোর ভিডিওকে মাদারিপুরের হত্যাকাণ্ডের বলে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতের বালাজি ভগবানপুর ধাম নামে একটি হিন্দু মন্দিরে ভুত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে ভিডিওর রীতি পালন করা হয়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে দৃশত মুণ্ডুহীন এক ব্যক্তির গড়াগড়ি খাওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মাদারিপুরে ঘটা এক হত্যাকাণ্ডে এক ব্যক্তির শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেললে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৮ মার্চ 'Sumon Miah' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে এমন একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "মাথা ছাড়া মানুষ বাচার জন্য কতো চেষ্টা মসজিদের ভিতরে"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। পোস্টে দেখানো ব্যক্তির মস্তক শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। মূলত, ভারতে অবস্থিত বালাজী ভগবানপুর ধাম নামে একটি হিন্দু মন্দিরে ধর্মীয়ভাবে ভুত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে আলোচ্য ভিডিওতে দেখানো রীতি-নীতি পালন করা হয়।
ভিডিওটি সম্পর্কে জানতে ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সার্চ করে ২০২২ সালের ৭ মার্চ 'Balaji Bhagwanpur Dham' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে "Ghosts are brutally beaten in Kashtabhanjan Bhagwanpur Balaji Dham." শিরোনামে আপলোডকৃত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শুরুতেই আলোচ্য ভিডিওটির মত একটি দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ডেস্ক্রিপশান থেকে জানা যায়, বালাজী ভগবানপুর ধাম নামে একটি মন্দিরে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছে। এছাড়াও, ওই ইউটিউব চ্যানেলটিতে আলোচ্য ভিডিওটির মত আরো একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে 'Balaji bhagwanpur dham' নামে একটি ফেসবুক পেজে ২০২২ সালের ১৪ এপ্রিল একটি পোস্টে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে প[আওা যায়। উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "कष्टभंजन भगवानपुर बालाजी धाम में भूतों पर पड़ती भयंकर मार।"(কষ্টভঞ্জন ভগবানপুর বালাজী ধামে ভুতকে ভয়ঙ্করভাবে পেটানো হলো)। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টটি মাদারীপুরের কোনো হত্যাকাণ্ডের সময়ে ধারণকৃত নয়। ভারতে অবস্থিত ভুত তাড়ানোর জন্য বিখ্যাত বালাজী ভগবানপুর ধাম নামে একটি মন্দিরে ধর্মীয় রীতিতে ভুত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে উক্ত কার্যক্রম চালানো এবং ভিডিও ধারণ করা হয়। উল্লেখ্য গত ৮ মার্চ (কাল) মাদারীপুরে তিন ভাইকে মসজিদের ভিতরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
সুতরাং ভারতের একটি মন্দিরের ভুত তাড়ানোর উদ্দেশ্যে চালানো কার্যক্রমের উপরে ধারণ করা ভিডিওকে মাদারীপুরের হত্যাকাণ্ডের বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।