ফসলি জমিতে আগুন দেয়ার ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রং মিশিয়ে প্রচার
এটি কুষ্টিয়ায় এক মুসলিম ব্যক্তির ধানের জমিতে দুর্বৃত্তদের আগুন দেয়ার ভিডিও, হিন্দুর জমিতে মুসলিমদের আগুন দেয়ার ঘটনার নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি থেকে ধানক্ষেতে আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশে ইসলামপন্থীরা হিন্দু কৃষকদের ধানক্ষেত পুড়িয়ে দিচ্ছে। এরকম দুটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ৮ ডিসেম্বর ‘Angaraj A Adhyatmik’ নামক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশী ইসলামপন্থীরা হিন্দুদের পাকা ধান ক্ষেতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। আর কতোক্ষন সহ্য করবেন আপনি?” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ধানক্ষেতে আগুন দেওয়ার ভিডিওটি বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বা ওই ধানক্ষেতও কোনো হিন্দু ব্যক্তির নয়। বরং গত ৫ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ায় নাসিম মিয়া নামে এক কৃষকের দেড় বিঘা জমির ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
ভাইরাল ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে “রাতে পেট্রোল দিয়ে কৃষকের ধানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা” শিরোনামে বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ‘Desh TV’ এর ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত ভিডিওটির সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, কুষ্টিয়ায় নাসিম মিয়া নামে এক কৃষকের দেড় বিঘা জমির ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। ভিডিওটি দেখুন--
ভিডিওটির সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “রাতে পেট্রোল দিয়ে কৃষকের ধানে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা” শিরোনামে আরেক সম্প্রচারমাধ্যম ‘চ্যানেল ২৪’ এর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, ৫ ডিসেম্বর দিবাগত ভোর রাতে সদর উপজেলার পিয়ারপুর লক্ষ্মীপুর গ্রামের কুষ্টিয়ায় নাসিম মিয়া নামে এক কৃষকের দেড় বিঘা জমির ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ কোনো হিন্দু কৃষকের ধানের জমিতে আগুন দেয়া হয়নি বরং নাসিম মিয়া নামের একজন মুসলিম কৃষকের ধানের জমিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ভাইরাল ভিডিও ঘটনার সঙ্গে বাংলাদেশের ইসলামপন্থীদের কিংবা হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো সম্পর্ক নেই।
সুতরাং নাসিম মিয়া নামের একজন মুসলিম কৃষকের জমিতে আগুন দেওয়ার ঘটনাকে হিন্দু কৃষকের ধানের জমিতে ইসলামপন্থীদের আগুন দেয়ার ঘটনা বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।