অজ্ঞাত শিশুর পুরোনো ছবিকে বাংলাদেশি শিশুর দাবি করে প্রতারণাপূর্ন সাহায্যে আবেদন
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, অসুস্থ শিশুর এই ছবিগুলো সাম্প্রতিক নয় বরং প্রায় দুই বছর আগে থেকে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি অসুস্থ শিশুর ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, শিশুটির নাম 'আল আমিন'। আর পরিচয় হিসেবে বলা হয়েছে শিশুটির বাবা অটোচালক, গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর,বাবুরহাট। পোস্টটিতে বলা হয়েছে, শিশুটি বর্তমানে জটিল নার্ভের রোগে আক্রান্ত, রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, চিকিৎসা করতে হলে প্রাই দুই লক্ষ টাকা দরকার। পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদ নম্বরও জুড়ে দেয়া হয়েছে পোস্টটিতে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩ জানুয়ারি 'Bloom News BD' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা এরকম একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা তথ্য বিভ্রান্তিকর ও সাহায্যের আবেদন প্রতারণাপূর্ণ। ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে রোগাক্রান্ত বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয় বরং ছবিগুলো প্রায় গত দুই বছর ধরে ইন্টারনেটের বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।
রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতির মাধ্যমে, 'Ngengeja wa Eternal' নামের একটি ফেসবুক পেজে সোয়াহিলি ভাষায় করা একটি পোস্টের সাথে ভাইরাল পোস্টে যুক্ত করা শিশুটির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২০ সালের ০৩ এপ্রিলে আপলোড করা হয়েছে। দেখুন--
একই ছবি 'Musa Kusek' নামের একটি তুর্কি ভাষী একটি ফেসবুক প্রোফাইলে একই বছরের ২০ আগস্ট আপলোড করা হয়। তবে কোন পোস্টেই শিশুটির সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি। পোস্টটি দেখুন--
অর্থাৎ ছবির শিশুটির প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত না জানা গেলেও, নিশ্চিতভাবেই ছবিটি সাম্প্রতিক সময়ের অসুস্থ কোন শিশুর নয়। বরং ভাইরাল পোস্টে যুক্ত করা শিশুর ছবিটি একাধিক ভাষায় প্রায় গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হয়ে আসছে।
পাশাপাশি, পোস্টগুলোতে সাহায্য পাঠানোর জন্য দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে আল আমিন নামে বাংলাদেশের ভিন্ন কোন শিশু সত্যিই কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে কোন হাসপাতালে ভর্তি আছে কিনা বা তার আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন কিনা, সে বিষয়ে বুম বাংলাদেশ আলাদাভাবে যাচাই করেনি।
সুতরাং অজ্ঞাত শিশুর ছবি জুড়ে দিয়ে তাকে বাংলাদেশি শিশু দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়াই আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর।