পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পড়া এই নারী এনসিপির সদস্য নন
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতের মধ্যপ্রদেশে এক পঞ্চায়েত প্রধানকে ভিন্ন এক নারীর সাথে দেখে ওই নারীর উপর আক্রমণ করেন তার স্ত্রী।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে এক নারীকে ভিন্ন এক নারীর উপরে আক্রমণের একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ভিডিওটিতে দেখানো নারী ঠাকুরগাঁয়ের জাতীয় নাগরিক পার্টি ( NCP) মহিলা সংগঠক। তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক সমন্বয়কের সাথে পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পড়েন। এরকম কয়েকটি ক্লেইম দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৮ মার্চ 'সংগ্রামী কন্ঠস্বর ১' নামে একটি ফেসবুক পেজে এক নারীকে ভিন্ন এক নারীর উপরে আক্রমণের একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "ঠাকুরগাঁয়ের জাতীয় নাগরিক পার্টি ( NCP) মহিলা সংগঠক ও সমন্বয়ক ধরা খেলো প্রেমিকের বউয়ের হাতে। এরা নাকি দেশ শাসন করবে। বিদ্রহ ঃশেষ দিকে বন্ধু ভাই,(ইকবাল হোসেন সুজন) পরিস্থিতি ঠান্ডা করে😜🙈🙈🙈 ভায়…"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--

ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। পোস্টের ভিডিওতে দেখানো নারীরা বাংলাদেশী নন। ভারতের মধ্যপ্রদেশের রাজ্যের উজ্জ্বয়ন শহরের নিমুচ নামে একটি গ্রামের জিতেন্দ্র মালী নামে এক পঞ্চায়েত প্রধানকে ভিন্ন এক নারীর সাথে পরকীয়ার সাথে যুক্ত থাকার প্রমাণ পান তার স্ত্রী। ঘটনাস্থলে দেখা যায়, নিজের স্বামীর সাথে পরকীয়ারত সেই নারীর উপরে আক্রমণ করেন ওই পঞ্চায়েত প্রধানের স্ত্রী।
ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতীয় গণমাধ্যম জি নিউজের অনলাইন ভার্সনে ২০২৪ সালের১৫ নভেম্বর "Wife Catches Sarpanch Husband Red-Handed With Girlfriend - Video Goes Viral On Social Media" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির মত একটি দৃশ্যের একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, "মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়িন জেলার একটি অস্বাভাবিক ঘটনা সংবাদ শিরোনামে এসেছে, যেখানে নিমুচ জেলার একজন সরপঞ্চকে (গ্রামপ্রধান) তার স্ত্রী একটি হোটেলের বাইরে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। উজ্জয়িনে এক মহিলা সঙ্গীর সাথে সময় কাটাতে বাড়ি থেকে প্রায় ২১০ কিলোমিটার দূরে ভ্রমণকারী সরপঞ্চ জানতেন না যে তার স্ত্রী সারাদিন তার কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করছেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--

আরো সার্চ করে 'News Art (न्यूज़ आर्ट)' নামে একটি এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে ২০২৪ সালের ১৫ নভেম্বর করা একটি পোস্টে আলোচ্য ভিডিওটির আরেকটু বড় ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই এক্স পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "উজ্জয়িনে, #সরপঞ্চ_জিতেন্দ্র তার বান্ধবীর সাথে লং ড্রাইভে গিয়েছিলেন..তার #স্ত্রী বিষয়টি জানতে পারেন..তারপর সরপঞ্চের স্ত্রী তার বান্ধবীকে মারধর করেন.."। এক্স পোস্টটি দেখুন--
এছাড়াও, ভারতীয় গণমাধ্যম এবিপি লাইভ এবং লোকমাত টাইমসের ওয়েবসাইটেও একই সংবাদ খুঁজে পাওয়া যায়।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওতে দেখানো নারীদের কেউ বাংলাদেশি নন। ভারতের এক নারী তার স্বামীর সাথে পরকীয়ায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এক নারীকে আক্রমণ করার সময়ে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
সুতরাং ভারতের এক নারীর পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পড়ার ভিডিওকে বাংলাদেশের এবং এনসিপির নারী সংগঠকের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।