লস অ্যাঞ্জেলেসে আগুন নিভানোর নয়, আযানের এই ভিডিওটি পুরোনো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আযানের এই ভিডিওটি পাকিস্তানের পুরোনো; যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের সাথে সম্পর্ক নেই।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপ থেকে একটি আজানের ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে আগুন নিভাতে আযান দেওয়া হচ্ছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৩ জানুয়ারি 'Kutubpurbashi [কুতুবপুরবাসী]' নামের একটি গ্রুপে ‘Mohammad Billal Ali’ নামের একাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, "আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের লজ এঞ্জেলস শহরে আগুন নিভাতে যখন সকল প্রযুক্তি ব্যর্থ! তখনই হুজুরদের দিয়ে আযানের মাধ্যমে আল্লাহর গজব থেকে বাঁচার জন্য মিনতি করছে। ইসলাম সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম, আল্লাহ সর্বশক্তিমান, এটা বিধর্মীরা অন্তরে স্বীকার করলেও আজ বাস্তবে মানতে বাধ্য হলো।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি লস অ্যাঞ্জেলেস শহরের দাবানলের সাথে সম্পর্কিত নয়; বরং এটি ২ বছর পুরোনো পাকিস্তানের ভিডিও।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “A supermarket was on fire A religious group tried to extinguish fire by group Prayer. It didn’t work, obviously” শিরোনামে ‘9Gag’ নামক একটি ওয়েবসাইটে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ১৭ই অক্টোবর পোস্ট করা ভিডিওটির সঙ্গে ফেসবুকে আলোচ্য দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, দলবদ্ধ কিছু ধার্মিক লোক আযানের মাধ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। স্ক্রিনশট দেখুন--
একই সার্চে “Some Moslems Led by Clerics Tried to Extinguish Fire by Azan (Islamic Prayer) in Karachi, Pakistan” শিরোনামে ‘WeAreAtWar’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালে ৫ জুন প্রকাশিত ওই ভিডিওটির সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটির বর্ণনায় বলা হয়, পাকিস্তানের জেল চৌরাঙ্গি এলাকার একটি সুপার মার্কেটে আগুনের ঘটনা ঘটলে আযান দিয়ে কিছু মুসল্লি আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ঘটনাটি ২০২২ সালের ৪ জুন সংঘটিত হয়। ভিডিওটি দেখুন--
আলোচ্য তথ্যের সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “Pakistanis hold Azaan as fire breaks out in supermarket” শিরোনামে ‘টাইম অব ইন্ডিয়া’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওর মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, ঘটনাটি ৫ জুন ২০২২ সালের পাকিস্তানের করাচির অগ্নিকাণ্ডের।
অর্থাৎ ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি লস এ্যাঞ্জেলেসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় আযান দেয়ার নয়; বরং দুই বছর আগের পাকিস্তানে ধারণ করা ভিডিও এটি।
সুতরাং দুই বছর আগে আগুন নেভাতে আযান দেয়ার পাকিস্তানের একটি ভিডিও পোস্ট করে তা যুক্তরাষ্ট্রের লস এ্যাঞ্জেলেসের বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।