কিউআর কোড বসানো নামফলকের ছবিটি জাপানের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, কিউআর কোড বসানো নামফলকের ছবিটি চীনের একটি থিম পার্কের যেটি গণহত্যায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে তৈরি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজে একটি কিউআর কোড সম্বলিত নামফলকের ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছবিটি জাপানের কবরস্থানের। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১০ মার্চ 'Md. Monir' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "জাপানের কবরস্থানে প্রতিটি কবরের গায়ে QR কোড থাকে। সেই কোড স্ক্যান করলে মৃত ব্যক্তির ছবি, নাম, ঠিকানাসহ পুরো জীবন বৃত্তান্ত দেখা যায়।" উক্ত ছবিটিতে একটি কিউআর কোড সম্বলিত নামফলক ও একজন দর্শনার্থীকে তা মোবাইলে স্ক্যান করতে দেখতে পাওয়া যায়। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। কিউআর কোড বসানো নামফলকের ছবিটি জাপানের নয়। ছবিটি চীনের চংকিং শহরের একটি থিম পার্কের। পার্কটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানী সেনাদের মাধ্যমে সংঘটিত নানজিং গণহত্যা ও চংকিং বোমাহামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে তৈরি করা হয়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ সংস্থা চায়না নিউজ সার্ভিসের ওয়েবসাইটে ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল "Online memorial dedicated to WWII victims" শিরোনামে প্রকাশিত একটি সচিত্র প্রতিবেদনে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির তৃতীয় ছবিটি ও আলোচ্য ছবিটি হুবহু এক। ছবিটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর চংকিংয়ে একটি থিম পার্ক তৈরি করা হয়েছে যেখানে কিউআর কোড সম্বলিত নামফলক লাগানো হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চীনে জাপানি সৈন্যদের দ্বারা সংঘটিত নানজিং গণহত্যা এবং চংকিং-এর বোমা হামলার শিকারদের স্মরণে ওই থিম পার্কটি তৈরি করা হয়। আলোচ্য ছবিটি ওই থিম পার্কের একটি নামফলকের। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো কি-ওয়ার্ড সার্চ করে চায়না ডেইলি এবং China.org.cn এর ওয়েবসাইট থেকেও একই তথ্য জানা যায়। উল্লেখ্য এর আগে আলোচ্য দাবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সেটি নিয়ে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বুমলাইভ। ওই ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনেও আলোচ্য ছবিটি চীনের বলে উল্লেখ করা হয়।
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি জাপানের কোনো কবরস্থানের নয় বরং চীনের চংকিং শহরে স্মারক হিসেবে নির্মিত একটি থিমপার্কের।
সুতরাং চীনের স্মারক থিমপার্কের ছবিকে জাপানের কবরস্থানের ছবি দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।