পোস্টে যুক্ত মেঘের একটি ছবি আইসল্যান্ডের
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ফেসবুক পোস্টে যে কয়েকটি মেঘের ছবি যুক্ত করা হয়েছে তন্মধ্যে অন্তত একটি ছবি জাপানের নয় বরং আইসল্যান্ডের।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে কিছুটা ভিন্ন আকৃতির কয়েকটি মেঘের ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, অদ্ভুদ আকৃতির এই মেঘ দেখা গেছে জাপানের ফুজিসাওয়া শহরের উপরে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ জানুয়ারি "Nirob Akash" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিগুলো পোস্ট করে লেখা হয়, "জাপানের আকাশে দেখা গেছে এমন অদ্ভুত আকৃতির এই মেঘ। প্রথমে মানুষ যখন এই মেঘ দেখে তখন অনেকেই এটিকে ইউএফও UFO বলে দাবি করে । বিরল গোলাকৃতির এই মেঘটি দেখা যায় জাপানের ফুজিসাওয়া শহরের উপরে। [...]"। । স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, সবগুলো ছবি এক স্থানের নয়। ছবিগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ছবি আইসল্যান্ডের।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা গেছে, 'International Business Times' নামের একটি সংবাদমাধ্যমে ২০১৯ সালের ২৩শে অক্টোবর 'Egg-shaped cloud that appeared in Iceland disappoints alien enthusiasts" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাড়ির উপর আকাশে ভাসমান ডিম্বাকৃতির মেঘের ছবিটি স্কট সি ওয়ারিং নামে এক ব্যক্তির ধারণ করা। স্কট নিজে এলিয়েন নিয়ে গবেষণা করেন বলে দাবি করে থাকেন। স্কট নিজের ওয়েবসাইটে এলিয়েনদের স্পেসশিপের একটি ছদ্মরূপ বলেও ধারণা করেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
যদিও প্রতিবেদনটিতেই আবহাওয়াবিদের বরাতে এলিয়েনদের স্পেসশিপে উপস্থিতির ধারণাটি খারিজ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই ধরণের ডিম্বাকৃতির মেঘ বিরল কিন্তু সাধারণ ঘটনা। এ আকৃতির মেঘকে লেন্টিকুলার ক্লাউড বলা হয়। প্রধানত কোনো আকাশচুম্বী বস্তু বা পর্বতের দ্বারা এই আকার পায়। সার্চ করার পর, The Reykjavik Grapevine নামের একটি আইসল্যান্ডিক ম্যাগাজিনে 'Mysterious Cloud Hovering Over Reykjavik Yesterday Morning Actually Common Phenomenon' শিরোনামে প্রকাশিত একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া। সেখানেও মেঘের এই আকৃতির পেছনে কোনো অতিপ্রাকৃতিক ঘটনার কথা নাকচ করা হয়েছে। দেখুন--
অর্থাৎ ছবিটি জাপানের নয় বরং আইসল্যান্ডের। পোস্টগুলোতে আরও কয়েকটি ছবি যুক্ত করা আছে যা বুম বাংলাদেশ যাচাই করেনি। তবে নিশ্চিতভাবেই সবগুলো ছবি জাপানের নয়।
সুতরাং আইসল্যান্ডের ভিন্ন আকৃতির একটি মেঘের ছবিকে জাপানের দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।