এটি তারেক রহমানকে ঝুলিয়ে পেটানোর ছবি নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, রতন নামে এক ব্যক্তিকে ২০০৭ সালে পুলিশি নির্যাতনের ছবিকে তারেক রহমানের বলে প্রচার করা হচ্ছে।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে এক ব্যক্তিকে দড়িতে ঝুলিয়ে রেখে নির্যাতনের একটি ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ছবিটি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্যাতনের। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
প্রায় ২ ঘন্টা আগে 'আমরা বিএনপির সমর্থক !!!' নামে একটি ফেসবুক গ্রুপে 'Creator by Rashed' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে এক ব্যক্তিকে দড়িয়ে ঝুলিয়ে রেখে নির্যাতনের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, "এই যে ঝুলিয়ে রেখে পিটাচ্ছে, বলতে পারবেন কে উনি? উনি আর কেউ নন "তারেক জিয়া"। রাষ্ট্র নায়ক জিয়াউর রহমানের সন্তান। আওয়ামীলীগ কে পূর্নবাসন করার আগে বিএনপিকে বলবো এই ছবিটার দিকে ১০ মিনিট তাকিয়ে থাকবেন 🙏 ফখরুল, রেজভীরা, দুদু রা নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে বিএনপিকে চিরতরে করব দিয়ে দিবে। সারাদিন নির্বাচন নির্বাচন জিকির করে কিন্তু দলের চাঁদাবাজি, মারামারি, হত্যা ইত্যাদি নিয়ে টু শব্দটুকু করে না। এখন আবার শুরু করছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিক্রি করা। তবে জাতি এখন সচেতন। দিন দিন বিএনপি নিজেদের কর্মকান্ডের কারনে নিজেরাই নি:শেষে বিভাজ্য হয়ে যাবে।" ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ছবির ব্যক্তি তারেক রহমান নন। রতন নামে এক ব্যক্তিকে ২০০৭ সালে চুরির অভিযোগে বগুড়া সদর থানায় নিয়ে নির্যাতন করে পুলিশ। সেসময়ে আলোচ্য ছবিটি ধারণ করা হয়।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে বিবিসি নিউজ বাংলার ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট "টিআইবির জরিপে পুলিশের দুর্নীতির যে হাল" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। বার্তাসংস্থা এএফপির ক্যামেরায় ধারণকৃত ওই ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, ২০০৭ সালের ২৫ জানুয়ারি বগুড়ার একটি থানার দৃশ্য এটি। কিন্তু ছবিতে দেখানো ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়নি। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে আরো সার্চ করে দৈনিক পত্রিকা দ্য ডেইলি স্টারের ওয়েব ভার্সনে ২০০৭ সালের ২৭ জানুয়ারি যুক্ত করা একটি ছবি প্রতিবেদনে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। Police Brutality শিরোনামের ওই ছবিটির বর্ণনায় বলা হয়, "চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার রতনকে বৃহস্পতিবার বগুড়া সদর থানার ডিউটি অফিসারের কক্ষে ছাদ থেকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে পুলিশ তাকে গতকাল গ্রেপ্তার দেখিয়েছে।" (অনূদিত)। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিতে যে ব্যক্তিকে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে তিনি তারেক রহমান নন বরং ২০০৭ সালে বগুড়ার সদর থানায় রতন নামে এক ব্যক্তিকে চুরির অভিযোগে আটক করে নির্যাতনের সময়ে আলোচ্য ছবিটি ধারণ করা হয়।
সুতরাং ভিন্ন ব্যক্তির নির্যাতিত হওয়ার ছবিকে তারেক রহমানের ছবি বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে যা বিভ্রান্তিকর।