ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়; মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর
আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে ভিডিও বার্তায় নিজেদের উপস্থিতি জানান দেন এএনডিএফ নামের একটি মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের জঙ্গী গোষ্ঠীর। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৯ ডিসেম্বর ‘Naim Chaudhuri’ নামক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “যেমন খুশি তেমন সাজো আরেকটি ভিডিও। সুদখোর দেশটাকে জঙ্গিদের অভয় অরণ্য বানিয়ে ফেলেছে...!!” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো সশস্ত্র জঙ্গী গোষ্ঠীর নয় বরং এটি মিয়ানমারের আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইরত আরাকান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এএনডিএফ) নামের একটি নতুন মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠীর।
ভাইরাল ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে “New Muslim armed group emerges in Arakan State” শিরোনামে ‘Development Media Group – DMG’ নামের একটি নিউজ পোর্টালে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে প্রকাশিত ছবিটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে আরাকান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এএনডিএফ) নামের একটি নতুন মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এএনডিএফের এক সদস্য তাদের উপস্থিতি প্রকাশ করে। ভিডিওতে তারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদনের সূত্র ধরে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “Who are they? Arakan Rohingya National Defence Force (ARNDF)_New Video” শিরোনামে ‘Rohingya Knowledge World’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ভিডিওটির সঙ্গে ফেসবুকে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটির ডিসক্রিপশনে এটি এএনডিএফর বলে উল্লেখ করা হয়। ভিডিওটি দেখুন--
নিচে ফেসবুকে বাংলাদেশি জঙ্গিগোষ্ঠী দাবিতে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ইউটিউবে পাওয়া এএনডিএফ নামক গোষ্ঠীর উপস্থিতি জানানের ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) দুটির মধ্যে মিল দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের নয় বরং এটি এএনডিএফ নামক মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর।
সুতরাং মিয়ানমারের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিওকে বাংলাদেশের জঙ্গী গোষ্ঠীর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।