ফিলিপাইনের ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে বঙ্গবাজারে কাপড় চুরির বলে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ফিলিপাইনের লুসিনা শহরে কম দামে সামান্য ত্রুটিযুক্ত পোশাক বিক্রেতা একটি দোকানের ভিডিও এটি।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর সেখানকার একটি দোকান থেকে কাপড় চুরির দৃশ্য এটি। ভিডিওটিতে একটি দোকানের সামান্য খোলা শাটারের নিচ দিয়ে মানুষকে হুড়োহুড়ি করে ঢুকে দোকানের পোশাক নিতে প্রতিযোগিতা করতে দেখা দেখা যায়। এরকম কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১১ এপ্রিল "মুফতী মাহমুদুল হাসান ফারুকী" নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে ফুটেজটি পোস্ট করা হয়েছে যার ক্যাপশনে লেখা, "বঙ্গবাজারে আগুন লাগার পর কাপড় চুরির দৃশ্য। আহ! জাতি হিসেবে আমরা লজ্জিত।"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটির ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। এটি বঙ্গবাজারে আগ্নিকাণ্ডের সময়ের ভিডিও নয় বরং এটি ফিলিপাইনের লুসিনা শহরে কম দামে সামান্য ত্রুটিযুক্ত পোশাক বিক্রেতা একটি প্রতিষ্ঠানের ভিডিও।
ভিডিওটি থেকে কি ফ্রেম নিয়ে সার্চ করার পর, "News5Everywhere" নামে ফিলিপাইনের একটি সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে "Balyahan, agawan ng mga customer sa isang ukay-ukay sa Lucena, viral" ক্যাপশনে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওর বিবরণ থেকে জানা যায়, ফিলিপাইনের লুসিনা শহরে ব্যবহৃত কাপড়ের দোকান ক্রেতাদের হুড়োহুড়ির দৃশ্য এটি। ব্যবহৃত বা সামান্য ত্রুটিযুক্ত কাপড়ের দোকানগুলোকে ফিলিপাইনে বলা হয় উকাই-উকাই (ukay-ukay)।
সার্চ করার পর, গত ৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ভাইস নিউজে ঘটনাটি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া গেছে। এই প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের লুসিনা সিটিতে উকাই উকাই দোকান চালু হবার আগেই ক্রেতারা পণ্য কেনার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করেন। ভিডিওটি ঐ ঘটনার। কম দামে সামান্য ব্যবহৃত বা ত্রুটিযুক্ত পোশাক কেনার জন্য উকাই-উকাই (ukay-ukay) ফিলিপাইনে বেশ জনপ্রিয়।
ভিডিওটি ভাইস নিউজ জাপানের টুইটার হ্যান্ডেলেও পোস্ট করা হয়েছিল।
অর্থাৎ ভিডিওটি বঙ্গবাজারের নয় বরং ফিলিপাইনের একটি দোকানের দৃশ্য এটি।
সুতরাং ফিলিপাইনের একটি কাপড়ের দোকানের ভিডিওকে রাজধানীর বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের সময়ে পোশাক চুরির বলে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।