লঞ্চ ডুবার ভিডিওটি কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ যুক্ত করে বানানো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, বিভিন্ন সময়ে একাধিক ঘটনার ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজ জোড়া দিয়ে আলোচ্য ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মাঝনদীতে লঞ্চডুবি হওয়ায় সময় ভয়ে চিৎকার করছেন যাত্রীরা। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৭ আগস্ট 'ভৈরব অনলাইন ফোরাম' নামের একটি পাবলিক গ্রুপে 'মোঃ হারুন খান' নামের একটি আইডি থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয়, "মাঝ নদীতে ডুবে যাচ্ছে যাত্রীবাহী লঞ্চ !! প্রাণে বাঁচতে সমস্ত যাত্রীদের আত্মচিৎকারে মুখরিত চারিদিক ।" ফেসবুক পোস্টটি দেখুন---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক সময়ের কোনো লঞ্চডুবির নয় এবং এটি একাধিক ঘটনার ভিডিও জোড়া দিয়ে বানানো।
ভিডিওটি থেকে আলদা আলাদা কয়েকটি কি-ফ্রেম পাওয়া যায়। কি-ফ্রেমগুলো যাচাই করে কয়েকটি ঘটনার আলাদা আলাদা ভিডিও খুঁজে পাওয়া গেছে। ভিডিওর কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০১৯ সালের ১০ এপ্রিল প্রকাশিত 'HASAN AHMED EYE' নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে "লঞ্চ ঝড়ের কবলে পড়লে কি করে যাত্রিরা দেখুন ভিডিও টি।" শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ৫০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটির ৪৭ সেকেন্ড কেটে নিয়ে আলোচ্য ভিডিওটির শুরুর বা প্রথম ৪৭ সেকেন্ড বানানো হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন--
আরো সার্চের মাধ্যমে অ্যালোচ্য ভিডিওতে দেখানো পরবর্তী ক্লিপটি খুঁজে পাওয়া যায় "5-Minute Gadgets" নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে। ওই ইউটিউব চ্যানেলটিতে ২০১৯ সালের ১৫ জুন "মাঝনদীতে প্রচন্ড ঝড়ের কবলে লঞ্চ ভয়াবহ সেই সময় এর চিত্র চাঁদপুরLaunch in the middle of a strong storm" শিরোনামে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ইউটিউব ভিডিওর ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের ভিডিওটি আর আলোচ্য ভিডিওর ৪৭ সেকেন্ড থেকে ২ মিনিট ১৬ সেকেন্ড পর্যন্ত দেখানো ক্লিপটি হুবহু এক। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
পরবর্তী ক্লিপের সূত্র ধরে আরো সার্চ করে "Forhad Bin Durud" নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০২২ সালের ১১ আগস্ট "প্রচন্ড ঝড় হাকিম উদ্দিন লঞ্চঘাট ভোলা।Hakim Uddin launch ghat Bhola।" শিরোনামে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। দেখা যায়, ভিডিওটি কোনো লঞ্চডুবির নয় বরং ঝড়ের সময়ে একটি লঞ্চঘাটে ধারণ করা। ভোলা জেলার হাকিম উদ্দিন লঞ্চঘাটে ঝড়ের সময়ে ধারণ করা ১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি আর আলোচ্য ভিডিওর ২ মিনিট ১৭ সেকেন্ড থেকে বাকি অংশটি হুবহু এক। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
অর্থ্যাৎ তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ের ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় ধারণ করা ভিডিওকে লঞ্চডুবির ভিডিও হিসেবে সম্প্রতি প্রচার করা হচ্ছে যা বিভ্রান্তিকর।