ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ার ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ভারতের গুজরাটের ভবনগর নামে একটি পৌর কর্পোরেশনের অফিসের ছাদ থেকে এক ব্যক্তির পড়ে যাওয়ার ভিডিও এটি।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে এক ব্যক্তির ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মামলার চাপ সইতে না পেরে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৮ মার্চ 'Md Rihan Khan' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "অনেক গুলো ভুয়া ও মিথ্যা মা*মলা দেওয়াই সহ্য করতে না পেরে ছয় তলা থেকে লাফ দিয়ে জীবন দিলেন ১ যুবক আহারে জীবন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। @highlight Sheikh Parash #SaveBangladeshFromYunus #highlights2025 #AwamiLeague"। ভিডিওটিতে এক ব্যক্তিকে কয়েক তলাবিশিষ্ট একটি দালানের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যেতে দেখা যায়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ উক্ত পোস্ট ও হ্যাশট্যাগ দেখে বোঝা যাচ্ছে উক্ত ঘটনাটি বাংলাদেশের বলে প্রচার করা হচ্ছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তি ভারতের গুজরাটের একটি পৌর কর্পোরেশন অফিসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
আলোচ্য ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় অনলাইন পোর্টাল 'divyabhaskar'-এর ওয়েবসাইটে "મનપા ઓફિસ પરથી મોતની છલાંગનાં LIVE દૃશ્યો:ભાવનગરમાં ચોથા માળેથી કૂદીને આધેડે જીવન ટૂંકાવ્યું, મેયર સહિતના દોડી ગયા, લોકોનાં ટોળેટોળાં ઊમટી પડ્યાં (পৌর কর্পোরেশন অফিস থেকে লাফিয়ে মৃত্যুর দিকে এক ব্যক্তির লাইভ ফুটেজ: ভাবনগরে চতুর্থ তলা থেকে লাফিয়ে মৃত্যু এক ব্যক্তির, মেয়র এবং অন্যরা পালিয়ে গেলেন, ভিড় জমে গেল মানুষের)" (গুগলের সাহায্যে অনূদিত)শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, গুজরাটের ভবনগর পৌর কর্পোরেশন অফিসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে এক ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
পরবর্তীতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতের গুজরাটভিত্তিক ‘কানেক্ট গুজরাট টিভি’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের ইউটিউব চ্যানেলে গত ৭ মার্চ "ભાવનગર : મનપા બિલ્ડિંગના ચોથા માળેથી આધેડે લગાવી મોતની છલાંગ, હચમચાવતી ઘટનાનો "LIVE" વિડીયો.." শিরোনামে আপলোডকৃত একটি একাউন্টে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটি থেকেও জানা যায়, ভবনগর পৌরসভা কর্পোরেশন অফিসের ছাদ থেকে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। তবে, ওই ব্যক্তি ছাদ থেকে পড়ে যাওয়া দুর্ঘটনা নাকি আত্মহত্যা সেটা নিশ্চিত করা হয়নি। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
এছাড়াও ভারতীয় অনলাইন পোর্টাল নিউজ এইটিন গুজরাটের এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে করা একটি পোস্টেও আলোচ্য ভিডিওটির ব্যাপারে জানা যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "ભાવનગર કોર્પોરેશનનાં બિલ્ડીંગ પરથી એક આધેડે પડતું મૂક્યું...મહાનગરપાલિકા કચેરીનાં ચોથા માળેથી કૂદી આપઘાત કર્યો (ভাবনগর কর্পোরেশন ভবন থেকে পড়ে একজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি... পৌর কর্পোরেশন অফিসের চতুর্থ তলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন-- গুগলের সাহায্যে)"। এক্স পোস্টটি দেখুন এখানে।
অর্থাৎ আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য পোস্টে দেখানো ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনার নয়। ভারতের গুজরাটের একটি পৌর কর্পোরেশনের অফিসের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় ওই ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
সুতরাং ভারতের এক ব্যক্তির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর ভিডিওকে বাংলাদেশের এক ব্যক্তির মামলার চাপে আত্মহত্যা করার ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।