রেস্টুরেন্টে আগুনের ভিডিওকে মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনা বলে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, সাতক্ষীরার 'রাজ প্রাসাদ' রেস্টুরেন্টের আগুনের ভিডিওকে মন্দিরে আগুন দেয়ার বলে প্রচার করা হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি নান্দনিক ডিজাইনের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের একটি হিন্দু মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৭ আগস্ট 'Sajal Kumer Roy' নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, "কেন এই আগুন আমার মন্দিরে?" পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে আগুন দেয়ার নয় বরং এটি সাতক্ষীরার 'রাজ প্রাসাদ' নামের একটি রেস্টুরেন্টে আগুন দেয়ার ঘটনার।
ভাইরাল ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "রাজ প্রাসাদ কফি শপ এন্ড রেস্টুরেন্ট কলারোয়া সাতক্ষীরা" শিরোনামে 'প্রিয় শহর বেনাপোল' নামের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যেই ভিডিওর সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির ভবনের কাঠামোর মিল পাওয়া যায়। ভিডিওতে প্রতিবেদককে বলতে শোনা যায়, 'রাজ প্রাসাদ' নামের এই রেস্টুরেন্টটি সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অবস্থিত। ভিডিওটি দেখুন--
নিচে ভাইরাল ভিডিওটির ছবি (বামে) ও ইউটিউব থেকে পাওয়া ভিডিওটির ছবির (ডানে) মধ্যে সামঞ্জস্যতা দেখুন--
এদিকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "সাতক্ষীরা কারাগার থেকে আসামিদের বের করে দিলেন বিক্ষুব্ধরা" শিরোনামে 'কালবেলার' অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ভবনের গঠনের সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবরে বিকালে সাতক্ষীরা শহরে আনন্দ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা। এ সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে ও আওয়ামী লীগের অফিসসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ভিডিওটির সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-দোকান-মন্দিরে হামলা, ছড়িয়েছে গুজবও" শিরোনামে 'আজকের পত্রিকার' একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজ প্রাসাদ কফি শপ ও রেস্টুরেন্টটির মালিক কলারোয়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাজী আসাদুজ্জামান শাহজাদা।
অর্থাৎ ভিডিওটি কোনো মন্দিরে আগুন দেয়ার ঘটনার নয়; বরং এটি একটি রেস্টুরেন্টে আগুন দেয়ার ঘটনার।
সুতরাং রেস্টেুরেন্টে আগুন দেয়ার ভিডিওকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপসনালয় মন্দিরে আগুন দেয়ার বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।