সেনাবাহিনী কর্তৃক ছাত্র পেটানোর পুরোনো ভিডিও ভিন্ন দাবিতে প্রচার
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ২০২৪ সালের নভেম্বরের এই ভিডিওটিকে সেনাবাহিনীর চলতি মাসের অ্যাকশনের বলে প্রচার করা হচ্ছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে সেনাবাহিনী কর্তৃক লাঠিপেটার একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, খেলা শুরু হয়ে গেছে। চলতি মাসে সমন্বয়কদের ধরে ধরে মারধর করছে সেনাবাহিনী। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৪ মার্চ ‘পদ্মা সেতু’ নামক একাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “সেনাবাহিনীর খেলা শুরু হয়ে গেছে, না দেখলে মিস করবে কিন্তু..... .ওই ধর ধর সমন্বয়ক ধর।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি বিভ্রান্তিকর। প্রকৃতপক্ষে ভাইরাল ভিডিওটি চলতি মাসের নয় বরং এটি ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের সময়কার।
ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভিডিওটির শেষে ‘এসএ টিভি’ এর লোগো যুক্ত করা।
পরবর্তীতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে ‘এসএ টিভি’র ফেসবুক পেজে “সায়েন্সল্যাবে সংঘর্ষ শিক্ষার্থী আটক” শিরোনামে একটি ভিডিও পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর করা পোস্টের ভিডিওর সঙ্গে ফেসবুকে সাম্প্রতিক দাবিতে ভাইরাল ভিডিওটির সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। পোস্টটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ভিডিওটি রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার। ভিডিওটি দেখুন--
নিচে সাম্প্রতিক দাবিতে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এসএটিভির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) দুটির মিল দেখুন পাশাপাশি--
পরবর্তীতে উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে কি ওয়ার্ড সার্চ করে “‘হাতাহাতি থেকে বাস ভাঙচুর’: ঢাকা ও সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থামাতে সেনাবাহিনী” শিরোনামে অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘বিডিনিউজ’ এর ওয়েবসাইটে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২৪ সালের ২০ নভেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘হাতাহাতির ঘটনা থেকে বাস ভাঙচুরের’ অভিযোগকে কেন্দ্র দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা তুমুল সংঘর্ষে জড়ায়। শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীও রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি চলতি মাসের নয় বরং এটি ২০২৪ সালের ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার সময়কার সেনাবাহিনীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের।
সুতরাং ২০২৪ সালের পুরোনো ভিডিও দিয়ে সাম্প্রতিক ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।