মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখতে গিয়ে একজন আটক হওয়ার ভিডিওটি পুরোনো
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, ৬ মাস আগে মন্দিরে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখতে গিয়ে এক ব্যক্তি আটক হওয়ার সময় ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হচ্ছে, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় মন্দিরে মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ পবিত্র কোরআন রাখতে যাওয়ার সময় একজন আটক হয়েছে। পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, সদ্য শেষ হওয়া হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা চলাকালে পূজাকে বানচাল করতে এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির লক্ষ্যে মন্দিরে কোরআন রাখার সময়ে এই ব্যক্তি আটক হন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৩ অক্টোবর "Gobinda Chandra Barman" নামে একটি আইডি থেকে দৈনিক জনকণ্ঠের সূত্র উল্লেখ করে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "জঙ্গীবাদীরা প্রাণপণ চেষ্টা করতেছে আমাদের এই দুর্গাপূজাকে ভন্ডুল করে ২০২১' র ন্যায় একটা সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও হামলার পরিবেশ তৈরি করতে। আবারও মন্দিরে কোরান রাখার চেষ্টা। সকলে নিজ নিজ স্থান দিয়ে সতর্ক হোন নয়ত আবারও বিপদ অনিবার্য।" স্ক্রিনশট দেখুন---
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। সদ্য শেষ হওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা চলাকালে মন্দিরে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন শরীফ রাখতে গিয়ে এই ব্যক্তি আটক হননি বরং গত এপ্রিল মাসে ঘটনাটি ঘটে। সেই সময়ে মো. ইদ্রিস খান নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। পুরোনো সেই ঘটনার সংবাদকে নতুন করে এখন দূর্গাপূজার সাথে মিলিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
ভিডিওটির ক্যাপশনে সূত্র হিসেবে দৈনিক জনকণ্ঠের নাম উল্লেখ থাকায় সার্চ করে পত্রিকাটির ওয়েবসাইটে গত ২৮ এপ্রিল "বাউফলে মন্দিরে কুরআন শরীফ রাখার সময় এক ব্যক্তি আটক" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। আলোচ্য ভিডিওর ব্যক্তির ছবিসহ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, "বাউফলের বগা ইউনিয়নের উত্তর রাজনগর গ্রামে কালি মন্দিরে পবিত্র কুরআন শরীফ রাখার সময় মোঃ ইদ্রিস খান (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।" স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে অনলাইন পোর্টাল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের ওয়েবসাইটে একই দিন অর্থ্যাৎ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল "মন্দিরে কোরআন রাখতে গিয়ে ধরা এবার পটুয়াখালীতে" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনেও আলোচ্য ব্যক্তির ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে দৈনিক প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনেও গত ২৮ এপ্রিল "বাউফলে মন্দিরে কোরআন শরিফ রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে একই ব্যক্তির ছবিসহ ঘটনার একই রকম বর্ণনা দেয়া হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ মন্দিরে কোরআন শরীফ রাখতে গিয়ে এক ব্যক্তির আটক হওয়ার ৬ মাস পূর্বের পুরোনো খবরকে সদ্য শেষ হওয়া দূর্গাপূজা চলাকালে নতুন করে প্রচার করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর।