ভিডিওটি পুরোনো, কুয়েটে ছাত্রদের উপরে হামলাকারী শিবিরকর্মী ধরার নয়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে এক তরুণের শিবিরকর্মী হিসেবে হামলার স্বীকারোক্তি আদায়ের সময়ে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে এক তরুণের স্বীকারোক্তির ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) প্রাঙ্গণে ছাত্রদের ভিতরের সংঘর্ষে শিবিরের সদস্যদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং ওই তরুণ সেই নির্দেশ পালন করতে এসেছেন। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি 'Shadat Hossien' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "শিবিরের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সাধারন শীক্ষার্থীদের উপর হামলা করতেছে শিবির কর্মীরা....এই নেন প্রমাণ....কুয়েট প্রসঙ্গ...."। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি কুয়েটের সংঘর্ষের সময়ের নয়। গতবছরের জুলাইয়ে চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকালে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই 'আবুল কালাম আজাদ' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে আলোচ্য ভিডিওটির মত হুবহু একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "ঢাকা কলেজ ও টিচার্স ট্রেনিং কলেজে হামলার নেপথ্যে ছিলো জামায়াত। সাধারন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে যে শিবির - ছাত্রদল ডুকছে তার প্রমানটা দেখুন প্রিয় মেধাবী ভাইয়েরা।" ভিডিওটিতে এক তরুণকে স্বীকারোক্তি দিয়ে বলতে দেখা যায়, "আমি শিবির করি। আমাকে শিক্ষার্থীদের উপরে হামলা করার জন্যে অনুমতি প্রদান করা হয়েছে"। ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
পরবর্তীতে, ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওটিতে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ডিবিসি নিউজের লোগো যুক্ত করা থাকতে দেখা যায়। তবে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ডিবিসি নিউজের ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরো সার্চ করে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম নিউজ টোয়েন্টিফোরের ইউটিউব চ্যানেলে ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই "‘আমি শিবির করি’ | Chatra Shibir | News24" শিরোনামে পোস্টকৃত আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ওই ভিডিওটিতেও স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রতিক কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় অংশ নেওয়া কোনো তরুণের স্বীকারোক্তির নয়। মূলত গত বছরে জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ওই ভিডিওটি ধারণ করা হয়। তবে, ভিডিওর তরুণের পরিচয় এবং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি বুম বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) প্রাঙ্গণে।
সুতরাং গতবছরের জুলাই মাসে চলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে এক তরুণের স্বীকারোক্তির ভিডিওকে সাম্প্রতিক কুয়েট ক্যাম্পাসে হামলার সময়কার বলে দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।